ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমান জেলা জজের এজলাসে ঘটে গেল ধুন্ধুমার কান্ড। খোদ জেলা আদালতের জজের এজলাসের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়ালেন পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) ও এপিপি রা (অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর)। আর এই নজিরবিহীন ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে রীতিমত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আদালত চত্বরে। যদিও ঘটনার সময় জেলা জজ এজলাসে উপস্থিত ছিলেন না। ইতিমধ্যেই হাতাহাতির ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন পিপি ও এপিপি দুপক্ষই।
গত শুক্রবার পি পি শ্যামল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ কে সামনে রেখে তার অপসারণের দাবিতে জেলা জজ ও জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ জমা করেছিলেন ২৮ জন এপিপি। তারপর থেকেই আদালতে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। পিপির সঙ্গে দীর্ঘদিন বনিবনা হচ্ছে না এপিপিদের। এই নিয়ে কোর্ট সরগরম আছে বেশ কিছুদিন ধরেই। মঙ্গলবার আদালত চত্বরে পোস্টারও পড়ে পিপির বিরুদ্ধে। এদিন পিপি জজ কোর্টে ঢুকতে গেলে সমস্যা তৈরি হয়। এপিপিদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় পিপির। দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হওয়ার মাঝেই শুরু হয় হাতাহাতি। দু পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় হতবাক বিচারপ্রার্থী এবং তাদের পরিবার পরিজনরা। অবাক হয়ে যান কর্মীরাও। প্রকাশ্য আদালতে পিপি এবং এপিপিরদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন তারা।
সরকারি আইনজীবী শ্যামল কুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,’ তাকে পাঁচ জন এপিপি ঘিরে ধরে। বারের সম্পাদক সদন তা, বিশ্বজিৎ দাস, মানস ব্যানার্জী ও অন্যরা আমাকে মারে। বুকে আঘাত করে। সরকারি কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমি প্রাণ ভয়ে ছুটে পালিয়ে যাই জজের এজলাস থেকে।’ তবে এপিপি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, উনি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। আমাকে ও মানসকে উনি ঘুষি মারেন। আমরা তার কাছে হাত জোরকরে এজলাস থেকে বেড়িয়ে যেতে বলি। আমরা তার গায়ে হাত তুলি নি। সবাই দেখেছেন উনিই আমাদের ঘুষি মেরেছেন।
অন্যদিকে এপিপি বিশ্বজিৎ দাস, সদন তা, মানস ব্যানার্জীদের অভিযোগ, বর্তমান পিপি র কোনো ফৌজদারি মামলা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেই। উনি এই পদে বসে এজেন্ট নিয়োগ করে বিভিন্ন ভাবে টাকাপয়সা তুলছেন। গুরুত্বপূর্ণ মামলা জুনিয়র এপিপি দের দিচ্ছেন। কম গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি সিনিয়রদের দিচ্ছেন। এতে বিচার ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।তাদের আরো অভিযোগ এই সরকার ক্ষমতায় এসে নিজ মতালম্বীদের নিয়োগ করেছিল। পিপি নিজের খেয়াল খুশিমত চলছেন। টাকা পয়সা নিয়ে মামলাকে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন তারা। তাদের দাবি, বর্তমান পিপির নিয়োগও সঠিকভাবে হয় নি। এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই এপিপি রা তাদের দাবীতে অনড় রয়েছেন। জেলা জজ কোর্টে আজও কোন কাজ হচ্ছে না।