শিশু দিবসেই মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত প্রাথমিকের পড়ুয়ারা, প্রধান শিক্ষককে তলব বর্ধমান পুরসভার

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: শিশু দিবসের দিনেই প্রাথমিকের শিশুদের স্কুলে বন্ধ রইল মিড ডে মিল। আর এই ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে বর্ধমান শহরে। ঘটনাটি বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল (প্রাথমিক বিভাগ) এর। মিড ডে মিল বন্ধ থাকার ঘটনায় ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে স্কুল ও প্রশাসনের মধ্যে চাপানতোর। প্রাথমিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ পাল মিড ডে মিল বন্ধের বিষয়ে বলেন, ” আমি গত শনিবার থেকে ছুটিতে আছি। শারীরিক ও মানসিক কারণে চিকিৎসাধীন রয়েছি। চিকিৎসক আগামী দু সপ্তাহ পুরোপুরি বিশ্রামে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।”

বিজ্ঞাপন

বিশ্বজিৎ বাবু বলেন, ” তবে স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ থাকার মূল কারণ মনে হয় রাঁধুনি দের অনুপস্থিতি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বর্ধমান পুরসভা আমার স্কুলের মোট ছয় জন রাঁধুনির মধ্যে চারজনের মাসোহারা বকেয়া রেখেছে। দুজনের টাকা দিলেও সেই দুজনের টাকা আমরা বাকি রাঁধুনির মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আসছি। এই সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। তবে এখনও এই বিষয়ে কিছু সুরাহা হয়নি। সম্ভবত এই কারণেই রাঁধুনিরা স্কুলে না আসায় মিড ডে মিল বন্ধ থাকতে পারে। তবে যেহেতু আমি স্কুলে নেই ঠিক কি কারণে কি হয়েছে বলতে পারবো না।”

এদিকে বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার কে স্কুলের মিড ডে মিল বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,” বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগের পক্ষ থেকে গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে মিড ডে মিল প্রস্তুতকারী রাঁধুনি দের অনেকের নির্দিষ্ট কাগজপত্র পুরসভায় জমা করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমরা দুজন রাঁধুনির মাসোহারা দিয়ে যাচ্ছি। স্কুল সেই দুজনের টাকা বাকিদের মধ্যে ভাগ করে দিচ্ছে। আর এতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাসত্ত্বেও কেন মিড ডে মিল বন্ধ হয়েছে সেব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষক কে আগামী বুধবার পুরসভায় এসে এই সম্মন্ধীয় সমস্ত বকেয়া কাগজ জমা দেবার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা চলতি সপ্তাহের মধ্যেই স্কুলের মিড ডে মিল সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে দেবো।”

এদিকে খোদ শিশু দিবসের দিনেই শহরের মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের মতো ঐতিহ্যবাহী স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের শিশুরা মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরাই নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে ছাত্রদের কেক কিনে খাইয়েছেন বলে জানতে পারা গেছে। যদিও স্কুলের এক সিক্ষক জানিয়েছেন, এটা মিড ডে মিলের পরিপূরক নয়। আজ শিশু দিবস উপলক্ষে মাস্টার মশাইরা তাদের খাইয়েছেন।

স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধের খবর এদিন দুপুরের দিকে প্রকাশ্যে আসে। বর্ধমান পুরসভার মিড ডে মিল দপ্তরের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর চঞ্চল ঘোষ সোমবার শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে মিড ডে মিল পরিষেবার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে পর্যবেক্ষণে যান। আর তখনই তার নজরে আসে মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগে মিড ডে মিলের রান্না হয়নি। ওই স্কুলেরই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে মিড ডে মিল চালু রয়েছে। পাশাপাশি হাইস্কুলে পরীক্ষা চলায় মিড ডে মিল বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনিও জানিয়েছেন, রাঁধুনি না আসার কারণেই এদিন মিড ডে মিল হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করেছেন তিনি।

আরো পড়ুন