রাজনীতি

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ঢোকার আগেই বর্ধমান স্টেশনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ! সরিয়ে দেওয়া হল প্রতিবাদী কে

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ঘড়িতে দুপুর ১২টা ৪৫মিনিট। তখনও হাওড়া – নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বর্ধমান স্টেশনে আসতে বেশ কিছুটা দেরী। স্টেশনের ভিতরে এবং বাইরে ভারতীয় এই বুলেট ট্রেন প্রথমবার দেখতে তখন মানুষের ভিড়ে থিক থিক করছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকা আরপিএফ, জিআরপি ও বর্ধমান থানার পুলিশের তৎপরতাও তুঙ্গে। এরই মধ্যে বর্ধমান স্টেশনের বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে একটা জটলা কে ঘিরে কৌতূহলী মানুষ ভিড় করতে শুরু করেছেন।

কিন্তু কি কারণে এই জটলা, তারই অনুসন্ধানে ফোকাস বেঙ্গলের প্রতিনিধি সেখানে পৌঁছালে দেখেন, এক ব্যক্তি হাতে বেশ কয়েকটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেশনের ভিতরে ঢোকার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকরা তাকে যেমন একদিকে বাধা দিচ্ছেন, পাশাপাশি বোঝানোর চেষ্টা করছেন সেই মুহূর্তের প্রটোকল সম্মন্ধে। তবু ওই ব্যক্তি নাছোড়। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি দেশের একজন নাগরিক। আমার কোন বক্তব্য আমি শান্তিপূর্ন পদ্ধতিতে তুলে ধরতেই পারি। আমি কোন রাজনৈতিক পতাকার সাহায্যও নিচ্ছি না। আমার সঙ্গে অন্য কোনো লোকজনও নেই। তাহলে আমাকে কেন আমার প্রতিবাদ বার্তা সাধারণ কে জানানো থেকে আটকানো হচ্ছে।’ যদিও পুলিশ আধিকারিকরা ওই ব্যক্তিকে শেষমেষ স্টেশনের ভিতরে ঢুকতে না দিয়ে বুঝিয়ে স্টেশন চত্বর থেকে সরিয়ে দিতে সফল হয়।

জানা গেছে, ওই ব্যক্তির নাম গৌরব সমাদ্দার। তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য। বৃহস্পতিবার হাওড়া – নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এর যাত্রা শুরু হওয়ার পর তিনি একাধিক প্ল্যাকার্ড নিয়ে বর্ধমান স্টেশনে হাজির হন কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। যদিও তাঁর সঙ্গে কোন রাজনৈতিক পতাকা বা ব্যানার ছিলনা। গৌরব সমাদ্দার এদিন প্ল্যাকার্ডে যে সমস্ত বক্তব্য লিখে নিয়ে এসেছিলেন সেগুলো হল – গরীব মানুষের পকেট কেটে বড়লোকেদের জন্য ‘ বন্দে ভারত ‘। ট্রেনের ভাড়া আগে কমাও তারপর কেরামতি দেখাও। ভারতীয় রেল কে বিক্রি করে মানুষের মন ঘোরাতে ‘ বন্দে ভারত ‘। বিদেশের বুলেট ট্রেনের স্পিড ৪০০ কিমি প্রতি ঘন্টা, ভারতীয় বুলেট ট্রেনের স্পিড ৮৩কিমি প্রতি ঘন্টা ( এই প্ল্যাকার্ড টি ইংরেজি তে লেখা ছিল)।

প্রসঙ্গত এদিন হাওড়া স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট সময়ে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন হওয়ার পর ট্রেনটি প্রথম স্টপেজ দেয় মশাগ্রাম স্টেশনে। তারপর শক্তিগড় স্টেশনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুরিন্দর সিং আহালুওয়ালিয়া। শক্তিগড় ছেড়ে বর্ধমান জংশন স্টেশন ঢোকে দুপুর ১টা ২৪মিনিটে। চার মিনিট দাঁড়িয়ে ১টা ২৮মিনিটে রওনা দেয়। তবে এদিন গোটা বর্ধমান স্টেশন চত্বর জুড়ে ছিল চোখে পড়ার মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনরকম নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে ব্যাপক তৎপর ছিলেন আর পি এফ, জি আর পি থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ।

ফলে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বর্ধমান স্টেশনে আসার অনেক আগেই গৌরব সমাদ্দারের এই কেন্দ্র সরকারের প্রতি আন্দোলন করার প্রচেষ্টা কে রুখে দেয় পুলিশ। যদিও গৌরব সমাদ্দার বলেন, ‘ আমি এদিন আসল সত্যটা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে রেল স্টেশনে গিয়েছিলাম। কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিলনা। পতাকাও ছিলনা। পুলিশ আমায় ভিতরে ঢুকতে দেয়নি। তবে ভারতবর্ষের জনগন জানেন কেন্দ্র সরকার কিভাবে দেশের মানুষ কে কার্যত বোকা বানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তারই একটা উদাহরণ।’

Recent Posts