রেনু খাতুন আবার তার ডান হাত দিয়ে সব কাজ করতে পারবেন! কৃত্রিম হাত লাগানোর উদ্যোগ প্রশাসনের

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: নার্সিং এর চাকরি পাওয়ায় স্বামীর রোষানলে পড়ে কয়েকমাস আগে নিজের ডান হাতের কব্জি খুইয়েছেন কেতুগ্রামর রেনু খাতুন। রেণু যাতে চাকরি করতে না পারেন তার জন্য তার স্বামী আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রেণুর হাত কব্জির নীচ থেকে কেটে দেয়। সেই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রেণুকে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কার্যত অকেজো হয়ে যায় রেনুর ডান হাত।

বিজ্ঞাপন

চিকিৎসা চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী রেনুর ডান হাত ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি তাকে চাকরি দেবার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। সুস্থ হওয়ার পর তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়। এবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের উদ্যোগে রেনু খাতুনের কৃত্রিম ডান হাত প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরফলে রেণু আগের মতই ডানহাতে সব কাজ করতে পারবেন। এমনকি লিখতেও পারবেন এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসা পরিভাষায় যা ‘বায়ো মেকানিক হ্যান্ড’ নামে পরিচিত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ডানহাতে অস্ত্রোপচার করে বায়ো মেকানিক হ্যান্ড বসানো হবে রেনুর। এই অস্ত্রোপচারের পুরো খরচ বহন করবে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ। শনিবার বর্ধমানে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রেনুর ডানহাতে কাটা অংশের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, রেণুর ডানহাতে কাটা অংশের নার্ভ বা স্নায়ু ও পেশি সক্রিয় রয়েছে। তাই তার ‘বায়ো মেকানিক হ্যান্ড’ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করছেন। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। আর সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই অস্ত্রোপচারের সম্পূর্ণ খরচ জেলা পরিষদ বহন করবে। এর ফলে রেণু আগের মতই ডান হাতেই স্বাভাবিক কাজ করতে পারবেন।”

প্রসঙ্গত সম্প্রতি বর্ধমানে এক কর্মসূচিতে এসে রেণুর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছিলেন, রেণুর কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করার কথা। এবার তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে।জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম বলেন, “এর জন্য ৪ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তা জেলা পরিষদ বহন করবে।” স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনের এই উদ্যোগে উচ্ছসিত রেণু। তিনি জানান, “আবার যদি আমি ডান হাতে আগের মতোই সব কাজ করতে পারি এর থেকে খুশির কিছু হতে পারেনা। তবে এই বিপুল খরচ বহন করার ক্ষমতা আমাদের ছিল না। ব্যক্তিগতভাবে ও পরিবারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ও পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে তাঁরা কৃতজ্ঞ।”

আরো পড়ুন