ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: প্রদীপের নিচেই অন্ধকার। জাঁকজমক পূর্ন ভাবে শহরের উৎসব ময়দানে চলছে বর্ধমান পৌর উৎসব। বর্ধমান পুরসভার আবহমান ঐতিহ্য কে তুলে ধরতে এবারের উৎসবের থিম করা হয়েছে ‘মায়ের কথা মাটির গান, ললিত কলার বর্ধমান’। অন্যদিকে সেই বর্ধমান পুরসভারই একাধিক ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থার চরম বেহাল চেহারা নিয়ে উঠতে শুরু করল প্রশ্ন।
সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ শহরের ২নং ওয়ার্ডের সুভাষপল্লী এলাকায় রাস্তার ধারে হাই ড্রেনের ওপর স্ল্যাব ভেঙে ড্রেনে ঢুকে যায় একটি গর্ভবতী গাভী। দুর্ঘটনার পরই স্থানীয়রা গাভী টিকে দ্রুত উদ্ধারের জন্য খবর দেন ফায়ার বিগ্রেড কে। ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমেই ড্রেনের যে অংশ দিয়ে গাভীটি পড়ে গিয়েছিল সেই জায়গাটি পর্যবেক্ষণ করেন। আর এরপরই ড্রেনের নিচে জমে থাকা দীর্ঘদিনের আবর্জনার স্তূপ দেখে ঘটনাস্থলেই রীতিমত ক্ষোভ উগলে দেন তারা। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও এলাকার মূল নিকাশি নালার এই হাল দেখে তাদের ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি। গাভীটি সেই বিস্তর আবর্জনার দুর্গন্ধের মধ্যেই প্রায় ঘণ্টা খানেক আটকে ছিল ড্রেনের নিচে। এলাকার কিছু যুবক ও দমকলের কর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টায় শেষে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ নর্দমার আবর্জনা সরিয়ে (রীতিমত বেলচা দিয়ে তুলে ফেলে) গাভীটি কে টেনে তুলে আনা হয়।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, শেষ কবে এই নালা পরিষ্কার করা হয়েছে কারুর মনে নেই। পুরসভার সাফাই কর্মীদেরও স্ল্যাব সরিয়ে এই ড্রেন পরিষ্কার করতে দীর্ঘদিন দেখেন নি তারা। এদিকে ডেঙ্গু নিয়ে পুরসভার সচেতনতার শেষ নেই। আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। বাড়ির পাশে কোথাও নোংরা জল দীর্ঘদিন জমে আছে কিনা, নিয়মিত এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয় কিনা ইত্যাদি। এদিকে শহরের গুরুত্বপূর্ন মূল নিকাশি নর্দমারই এই হাল। ড্রেনের ওপর স্ল্যাব ও কংক্রিটের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষ যাতায়াত করছেন। এই ড্রেনের পাশেই রয়েছে প্রচুর বাড়ি। স্বাভাবিকভাবেই এই সমস্ত মূল নিকাশি নালাই যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা না হয় তাহলে ডেঙ্গুর মতো রোগের আঁতুড় ঘর তো খোদ পুরসভাই তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন,’ ঘটনা সম্পর্কে আজকেই খোঁজ নেবো। যদি এমন অবস্থা থেকে থাকে তাহলে যারা এই কাজের দায়িত্বে আছেন তাদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হবে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ অন্যদিকে পুরসভার জঞ্জাল ও সাফাই দপ্তরের এমসিআইসি কাউন্সিলর প্রদীপ রহমান বলেন,’ আপনার কাছে বিষয়টি জানতে পারলাম। তবে আমরা বর্ষার আগেই শহরের সমস্ত প্রধান নিকাশি নালা গুলোকে জঞ্জাল মুক্ত করে দিয়েছিলাম। এছাড়াও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দের নিজের ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য জানানো আছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে রোড সরকার নিয়োগ করা আছে মোটা মাইনে দিয়ে। তারাই ড্রেন সাফাইয়ের বিষয়টি নিয়মিত দেখেন। যদি সুভাষপল্লী এলাকায় নিকাশি নালার এই অবস্থা থাকে সেক্ষেত্রে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’