জেলা

ফের শুরু হবে নদী থেকে বালি উত্তোলন, জামালপুরে আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়ছে গ্রামবাসীদের

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর বেশ কয়েক বছর আগে গ্রামের মানুষদের দান করা জমিতে তৈরি হয়েছিল পিচ রাস্তা। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রায়নার বাঁধগাছা থেকে জামালপুরের ফতেপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৯কিলোমিটার রাস্তা। তার মধ্যে জামালপুর থানার শম্ভুপুর গ্রাম থেকে কাড়ালাঘাট বাজার পর্যন্ত রাস্তা তৈরি হয়েছিল পিচের। কিন্তু বছর তিনেকের মধ্যেই সেই রাস্তায় পিচের চিহ্নমাত্র নেই। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাতের অন্ধকারে শয়ে শয়ে চলা ওভারলোড বালি বোঝাই ডাম্পারের দাপটে রাস্তার পিচ কার্যত উধাও। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা এখন কার্যত গর্ত আর খানাখন্দে ভরেছে।

৩০ থেকে ৩৫টি গ্রাম রয়েছে এই রাস্তা লাগোয়া এলাকায়। গ্রামের কৃষকদেরই জমি ছিল এলাকায়। গ্রামের মানুষ যাতে সুস্থভাবে, ভালোভাবে যাতায়াত করতে পারেন সেই আশায় গ্রামের বহু মানুষ জমি দান করেছিলেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে, এলাকার পড়ুয়ারা নিশ্চিন্তে স্কুলে যেতে পারবে, এই আশায় নিঃশর্তে গ্রামের কৃষকরা জমি দিয়েছিলেন সরকার কে। কিন্তু কয়েকবছরের মধ্যেই ছবিটা সম্পূর্ন পাল্টে গেলো। প্রথমে যে রাস্তা তৈরি হয়েছিল পরবর্তীকালে সেই রাস্তা আরো চওড়া হয়। আর চওড়া হতেই শুরু হল বিপত্তি।

 

এই রাস্তা দিয়ে চলতে শুরু করল ১০চাকা, ১২চাকা, ১৬চাকা ওভারলোডিং বালি আর পাথরের ট্রাক, ডাম্পার। ফলে রাস্তা ভাঙতে শুরু করে। রাস্তা তৈরি সময় ফলক লাগানো হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল ১০ টনের বেশি ভারী যান চলাচল করতে পারবে না এই রাস্তায়। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ৬০ থেকে ৭০ টন মাল বহনকারী কয়েকশো বালির ডাম্পার এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে। ফলে রাস্তাটি যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়, চারিদিকে গর্ত। স্কুল পড়ুয়ারা জীবনে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। জীবনে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন সাধারণ মানুষও।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘাট খুললেই ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাক প্রতিদিন যাতায়াত করে এই রাস্তায়। কোন কোন সময় আরো বেশি তো কম নয়। তবে দিনে নয়, রাতেই বালি বোঝাই ট্রাক চলে বেশি। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, গ্রামীন এলাকা দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করতে পারবেনা। কিন্তু সেই সমস্ত নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে অবাধেই চলে ওভারলোডিং ট্রাক। এলাকাবাসীরা প্রশাসনের সমস্ত জায়গায় আবেদন করেও কোন ফল পাননি বলেই অভিযোগ। ফলে বন্ধ হয়নি বালি আর পাথর বোঝাই ডাম্পার ও ট্রাক চলাচল। কয়েকদিনের মধ্যেই আবারো চালু হবে দামোদর নদের বৈধ, অবৈধ বালি খাদান গুলি। ফের ভারি ভারি ডাম্পার আর ট্রাক এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করবে। ফের সবকিছু দেখেও চোখ বন্ধ করে থাকবে পুলিশ ও প্রশাসন! ফলে দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়তে শুরু করেছে এলাকাবাসীর।