লাইফ টক

প্রচারের আড়ালে থেকেই দুস্থ, অসহায়দের প্রাণের মানুষ হয়ে উঠেছেন সঞ্জয়, রাজিবরা

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: কনকনে শীতের বিকেলে ৮থেকে ৮০ বছর বয়সী শ’খানেক শিশু,মহিলা,পুরুষ জুবুথুবু হয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শান্তভাবে। কারুর গায়ে শুধুই একটি জামা, কিংবা শাড়ি, আবার কারুর পরনে কেবল লুঙ্গি, গেঞ্জি। পড়ন্ত বিকেলে ঠান্ডা একটু একটু করে বাড়ছে। তবু সবাই নিঃশব্দে অপেক্ষা করে আছেন কখন তাঁরা আসবেন। তাঁরাই তাদের খবর দিয়েছেন এখানে আসার জন্য। সারাদিন লোকের দুয়ারে ঘুরে দু মুটো অন্নের জোগাড় করার পর রাতের ঘুমটা যাতে একটু সুখের,আরামের হয় তাই তাঁরা এদের হাতে তুলে দেবেন মোটা কম্বল। আর এই একটা কম্বলের জন্যই শহরের ভবঘুরে থেকে দুস্থ, অসহায় মানুষগুলো দাঁড়িয়ে আছেন লম্বা প্রতীক্ষায়।

বিকেল তখন প্রায় ৪টে। বর্ধমান শহরের বাদামতলা মোড়ের কার্জন রেসিডেন্সির পিছনে দুটি টেবিলে সাজানো হয়েছে থরে থরে মোটা, রঙিন শতাধিক কম্বল। প্রতিবছরই সঞ্জয় সাউ, রাজিব রায়, সৌরভ পাল, শুভাশিস সিদ্ধান্ত, অরবিন্দ ঘোষরা অসহায় মানুষদের শীতের কম্বল বিতরণ করে থাকেন। এবছরও ইতিমধ্যেই কয়েকশো কম্বল শহরের বিভিন্ন প্রান্তের দুস্থ মানুষদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছেন। শনিবার আবারও প্রায় একশ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হল কম্বল। স্বাভাবিকভাবেই শীতের কামড় যখন প্রতিদিন বাড়ছে, এই অসহায় মানুষগুলোর কষ্টও সমান তালে বেড়ে যাচ্ছে। আর তাই কিছুটা হলেও এদের কষ্ট লাঘবে সহমর্মিতা, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রচারের আড়ালে থাকা শহরেরই কিছু প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, নাগরিক।

সঞ্জয় সাউ, রাজিব রায় রা বললেন,’ মানুষ হিসেবে আরেকজন মানুষের কষ্টে যদি পাশেই না থাকতে পারি তাহলে শিক্ষা, রোজগারের মূল্যই বা কি। রোজগার করার অর্থ যদি শুধু নিজের পেট ভরানোই হয় তাহলে সমাজের এই শ্রেণীর মানুষগুলোর কথা কারা ভাববে! আমরা করোনার অতিমারির সময়েও প্রতিদিন শতাধিক মানুষ কে দুবেলা পেট ভরে খাইয়েছি। এখনও সেই অভ্যাস জারি রেখেছি। প্রতিবছর শীতকালে পাঁচশো থেকে হাজার দুস্থ, অসহায় মানুষকে কম্বল বিতরণ করি। এইসব কাজ করে শান্তি পাই। প্রতিদিন নতুন করে বাঁচতে শিখি। ভালোলাগে ওদের পাশে থাকতে পেরে।’