দেবী সর্বমঙ্গলা মায়ের ঘট উত্তোলন ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই বর্ধমানে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হল শারদ উৎসবের

Souris  Dey

Souris Dey

সৌরীশ দে,বর্ধমান: রাজ আমলের প্রথা মেনেই রবিবার বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মায়ের ঘট উত্তোলন ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই বর্ধমানে আনুষ্ঠানিকভাবে শারদ উৎসবের সূচনা হল। মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে রূপোর ঘটে কৃষ্ণসায়ের থেকে জল ভরে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘট নিয়ে বাদ্যযন্ত্র সহকারে শোভাযাত্রা করে মন্দিরে আনা হয়। এদিনের ঘট উত্তোলন উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রায় বহু মানুষ অংশ নেন। এই শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তার দুধারে ভীড় উপচে পড়ে। এরপর এই ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয় মায়ের মন্দিরে।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, ১৭০২ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে চুনুরীদের কাছে থাকা দামোদর নদের পার থেকে উদ্ধার করে দেবী সর্বমঙ্গলাকে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ মন্দিরে প্রতিষ্টা করেন। সেই সময় থেকেই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা। সেই সময় আজকের মন্দিরের রূপ না থাকলেও, পরবর্তী সময়ে মা সর্বমঙ্গলার বিশাল মন্দির তৈরি করা হয়। মন্দিরের প্রবেশ পথে তিনটি স্তরে পোড়া মাটির মূর্তি রয়েছে। মুল মন্দিরের সামনে রয়েছে নাট মন্দির। দক্ষিনের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকে দুধারে রয়েছে দুটি শিব মন্দির।

প্রতি বছরের মতো চিরাচরিত প্রথা মেনে মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে দেবীর ঘট তোলা হয়, আজও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। বিপুল ভক্তসমাগমের মধ্যে, শোভাযাত্রা সহকারে, ঢাক, ব্যান্ড বাজিয়ে, ধুনুচি নাচ সহযোগে জোড়া ঘোড়ার গাড়িতে করে মায়ের বিগ্রহ নিয়ে গিয়ে কৃষ্ণসায়র থেকে রুপোর ঘটে জল পুড়ে দেবীর ঘট প্রতিষ্টা হল। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক খোকন দাস, পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার, জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ, পুরসভার কাউন্সিলর গণ সহ রামকৃষ্ণ আশ্রমের মহারাজ, মন্দির ট্রাস্ট কমিটির পদাধিকারীগণ।

মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পুরোহিত অরুণ ভট্টাচার্য বলেন,” আজ ঘট উত্তোলনের মধ্যে দিয়েই শারদ উৎসবের সূচনা হয় গেল। আগামী ৯ দিন ধরে চলবে নবরাত্রির মায়ের পুজো। তার সাথে চণ্ডীপাঠ। এছাড়াও বছরের প্রতিদিনই নিয়ম মেনে দেবীর পুজা হয়। দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। দেবী এখানে কষ্টিপাথরের, অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী। রুপোর সিংহাসনে মা আসীন। আগে সন্ধি পুজোয় কামান দাগা হতো, মেষ, মহিষ ও ছাগ বলি হতো। বর্তমানে আর হয় না। সন্ধিপুজোয় কামানের আওয়াজ শুনে আশেপাশের সমস্ত জমিদার বাড়িতে সন্ধিপুজো শুরু হতো। নবমিতে হয় কুমারি পুজো।” এদিন মা সর্বমঙ্গলার ঘট উত্তোলন কে ঘিরে ভোর থেকেই পুরুষ, মহিলারা ভক্তরা নতুন পোশাকে হাজির হয়েছিলেন মন্দির চত্বরে।

আরো পড়ুন