ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: সরকারি বাসে চেপে নির্দিষ্ট সময়ে নিশ্চিন্তে গন্তব্যে পৌঁছানোও আজকাল একপ্রকার মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে যাত্রীদের। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে সাত সকালে দুর্গাপুর থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার বাসে কলকাতার করুণাময়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে মাঝ রাস্তায় বাসের চাকা ফেটে গিয়ে প্রায় দু ঘন্টা দাঁড়িয়ে যেতে হল যাত্রীদের। এমনকি সরকারি বাসের চালক ও কন্ডাক্টরের কাছে চাকা সরানোর জন্য যে নূন্যতম টাকা থাকা দরকার তাও না থাকায় যাত্রীদের কাছ থেকে সেই টাকা সংগ্রহ করে চাকা সরানোর পরই ফের রওনা হয় বাসটি। অভিনব ও অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের কাছে আমড়ায়। স্বাভাবিকভাবেই সরকারি বাস পরিষেবার এই মান নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ক্ষুদ্ধ সাধারণ যাত্রীরা।
প্রসঙ্গত প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সরকারি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। কখনো আবার মাঝ রাস্তায় বিকল হয়ে গিয়ে হয়রানির মধ্যে পড়ছেন যাত্রীরা। আর এবার একেবারে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হল জনা ত্রিশেক যাত্রী কে। সোমবার সকাল ৭.৪০ নাগাদ দুর্গাপুর থেকে সল্টলেকের করুণাময়ীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে বাসটি৷ ৯ টা নাগাদ শক্তিগড়ের আমরায় পৌঁছায় বাস। সেখানে ল্যাংচার দোকানে প্রতিদিনের মত টিফিনের বিরতিতে দাঁড়ায় বাসটি।
কিন্তু বাস ছাড়তেই বিপত্তি। বাসের চাকা ফেটে গিয়ে ফের দাঁড়িয়ে পড়ে। শুরু হয়ে যায় ফোনফুনি। রীতিমত ফাঁপরে পড়েন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন কাজে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে যাত্রীরা। ড্রাইভার এবং কন্ডাকটর মিলে বহু চেষ্টা করেন যাত্রীদের সমস্যা সমাধানের। যোগাযোগও করা হয় বর্ধমান এবং দুর্গাপুর ডিপোতে। তবু সমস্যার সুরাহা হয়নি বলেই যাত্রীদের অনেকেই জানিয়েছেন। এরই মধ্যে যাত্রীরা জানতে পারেন চাকা সরানোর জন্য যে ১২০০ টাকা খরচ হবে সেই টাকাই চালক বা কন্ডাক্টরের কাছে নেই। অগত্যা নিজেদের স্বার্থে প্রায় পৌনে দু’ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর নিজেরাই চাঁদা তুলে বাসের চাকা সরানোর বন্দোবস্ত করলেন যাত্রীরা। যদিও গাড়ি ছাড়ার পর কন্ডাকটর যাত্রীদের টাকা ফেরত দিয়ে দেন।
এদিকে খোদ সরকারি বাস পরিষেবার এই হাল নিয়ে রীতিমত ক্ষুদ্ধ যাত্রীরা। যাত্রীদের অনেকে জানিয়েছেন, কেউ পরীক্ষা দিতে, কেউবা ফ্লাইট ধরতে বা অন্য বিভিন্ন জরুরি কাজে যাচ্ছিলেন। এই অবস্থার ফলে চরম ভোগান্তি আর ক্ষতি হল তাদের। এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষের এহেন তুঘলকি আচরণের বিহিত চান তাঁরা। এই বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী বাসের চালক। চাকা ফাটতেই পারে। কিন্তু প্রত্যেকটি বাসে একটি করে বাড়তি টায়ার রাখা থাকে। এদিন চালক টায়ার খোলার যন্ত্রপাতি বাসে তুলতে ভুলে গেছে। তারজন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। চালকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কনসার্ণ লেটার তৈরি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হবে।’