latest

দেশে প্রথম, দুর্ঘটনা রোধে চালকের ঘুম ভাঙাতে পুলিশের গাড়িতে বসেছে অ্যালার্ম সেফটি ডিভাইস

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: সাধারণ মানুষের চারচাকা গাড়িই হোক কিংবা পুলিশের, টানা দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানোর পর ক্লান্তি অনেক চালকেরই শরীরকে প্রভাবিত করে। গাড়ি চালাতে চালাতেই অনেক সময়ই চালক আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে ঘুমে। আর তার ফলস্বরূপ যে ভয়ানক পরিণতির মুখে পড়তে হয় খোদ চালককে ও তার পাশাপাশি যাত্রীদের, এরকম একাধিক ঘটনার রেকর্ড রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের বিভিন্ন থানার পুলিশের কাছে। এমনকি পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার এক ওসি সহ চারজন পুলিশ কর্মী চালকের এই ভুলে রীতিমত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছে, এমন নজিরও রয়েছে।

অপরাধ করার পর অপরাধীরা রাজ্যের বাইরে গা ঢাকা দিলে প্রায়ই জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ কে তদন্তের স্বার্থে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি নিয়ে ছুটতে হয় অপরাধীদের ধরে আনতে। দীর্ঘক্ষণ টানা গাড়ি চালাতে হয় চালকদের। কারণ সময়ের একটা বিষয় থাকে তদন্তের প্রয়োজনে। ফলে চালকদেরও দায়বদ্ধতা থাকে এইসব ক্ষেত্রে। কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময় নিজের অজান্তেই চালক খোদ নিজেকে এবং গাড়ির যাত্রীদের প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে পড়ে।

প্রসঙ্গত চালকদের এই বিশ্রামহীন ক্লান্তির কারণে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়ি। আর এই ধরনের অবস্থার পরিবর্তন এনে গাড়ি দুর্ঘটনা আটকাতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ রীতিমত নজিরবিহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গাড়িতে লাগানো হচ্ছে একটি ডিভাইস।আর এই ব্যবস্থা পুলিশিং সিস্টেমে দেশের মধ্যে সম্ভবত প্রথম। সেনাবাহিনীতে এই ব্যবস্থা সম্প্রতি কার্যকর করা হলেও, পুলিশের গাড়িতে এখনও এই ব্যবস্থা দেশে কোথাও চালু হয়নি বলেই খোদ পুলিশ সূত্রেই জানা গেছে।

কিন্তু কি এই ব্যবস্থা? কিভাবে কাজ করবে ডিভাইসটি? পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চালকের সামনে থাকা এই ডিভাইসে থাকছে একটি সেন্সার। চালকের চোখের পাতা তিন সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হলেই গাড়ির ভিতরে বেজে উঠবে অ্যালার্ম। একই সঙ্গে সেই বার্তা চলে আসবে জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। চলে আসবে জেলা পুলিশ সুপার সহ পদস্থ আধিকারিকদের মোবাইলেও। ফলে গাড়ির অন্য যাত্রীরা যেমন চালক কে সচেতন করে দিতে পারবে, তেমনই চালকের ঘুম না ভাঙলে ফোন করেও পুলিশ কর্তারা সজাগ করে দিতে পারবে যাত্রীদের।

এই ডিভাইস প্রস্তুতকারক কোম্পানীর এক আধিকারিক পঙ্কজ শর্মা বলেন, ‘গাড়ির গতিবেগ কুড়ি কিলোমিটারের উপরে থাকলেই এটি জিপিআরএস পদ্ধতিতে অ্যক্টিভ হয়ে যাবে। আর অ্যালার্মের সাউন্ড ধাপে ধাপে পাঁচ থেকে ছয় সেকেন্ডে এমন জায়গায় যাবে, তাতে যেকোনো কারুর ঘুম ভাঙবেই। আরও বড় বিষয় কেউ যদি সেন্সার ঢেকে দেয় সেক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে ও অটোমেটিক এসএমএস চলে যাবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক দের কাছে।’

জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন বলেন,”নোভাস এওয়ার নামে একটি সেফটি ডিভাইস লাগানো হয়েছে গাড়িতে। আপাতত ২টি গাড়িতে লাগানো হয়েছে পরীক্ষা মূলকভাবে। ধাপেধাপে জেলা পুলিশের বেশিরভাগ গাড়িতেই এগুলি ব্যবহার করা হবে। এই সেফটি ইক্যুইমেন্ট ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পুলিশ কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে।”  সূত্রের খবর একটি ডিভাইসের দাম পড়ছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা।

Recent Posts