ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ছোটবেলা থেকে প্রতিবছরই নিয়ম করে জন্মদিন পালন করতেন মা ও পরিবারের অন্যান্যরা। পরে বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে ডেকে ধুমধাম করেও অনেকবার জন্মদিন পালন হয়েছে। দেখতে দেখতে বয়স আজ পঞ্চাশে পা দিয়েছে। এখন নিজের মা, স্ত্রী,মেয়ে সহ ভরা সংসার। নিজেও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসাদার। ব্যবসার সূত্রে বন্ধুবান্ধবের সংখ্যাও আজ অনেক। আত্মীয়ের সংখ্যাও শ্বশুরবাড়ি, নিজের বাড়ি মিলিয়ে বেড়েছে। যোগাযোগও রয়েছে প্রায় সকলের সঙ্গেই। তবে বিশেষ কোন উপলক্ষ ছাড়া নানান জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই নিজের আত্মীয়দের একসাথে পাওয়া খুব মুশকিল। এই নিয়ে আক্ষেপও ছিল বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর, বটতলা নিবাসী ব্যবসায়ী গৌতম দাসের।
অবশেষে সেই আক্ষেপ মেটাতে তার ৫০তম জন্মদিনকে সামনে রেখে নিজের বাড়িতেই পারিবারিক মিলন উৎসবের আয়োজন করলেন গৌতম বাবু। বৃহস্পতিবার ছিল তার জন্মদিন। আর সেই উপলক্ষে দিনে ১০০ ও রাতে ৩০০ মানুষকে আমন্ত্রণ করে খাওয়ানোর আয়োজন করেন তিনি। নিমন্ত্রিতদের জন্য বাড়িতেই তৈরি করা হয়েছিল প্যান্ডেল। আত্মীয়স্বজনরা তো ছিলই, তার সঙ্গে বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীরাও নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে হাজির হয়েছিলেন গৌতম বাবুর বাড়িতে।
সকাল থেকেই এদিন গৌতম বাবুর বাড়িতে হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার শুরু হয়ে যায়। তবে পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই জন্মদিনের আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল নজরকাড়ার মতো। ‘বার্থডে বয়’ গৌতম বাবুর জন্য এদিন পরিবারের সদস্যরা অভিনব এক বিশেষ আয়োজন করেন। ৫০রকমের খাবারের পদ রান্না করে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান পরিবারের সকলে। সেখানে মাছের আইটেমই শুধু ছিল ১২রকমের। কি মাছ ছিলনা সেখানে! রুই, কাতলা থেকে শুরু করে ইলিশ, পাবদা, চিতল, চিংড়ি, আড়,ভেটকি সহ আরো কয়েক ধরনের মাছের পদ দিয়ে সাজানো হয়েছিল গৌতম বাবুর ৫০’এর থালি। শুধু তো মাছের পদই নয়, ঘরের মেঝের অর্ধেক জায়গা জুড়ে সাজানো নানান পদের রান্নার মধ্যে যত রকমের সবজি হয় তার তরকারি, চাটনি, পাঁপড়, একাধিক নানান স্বাদের মিষ্টি, দই, ফল সহ আরো কত কি। এক কথায় রীতিমত এলাহি আয়োজন করা হয়েছিল ৫০এ পা রাখা গৌতম বাবুর জন্য।
যদিও ৫০রকম পদের রান্নার আয়োজন কেবল গৌতম বাবুর জন্যই তৈরি করা হয়েছিল বলেই জানান বাড়ির কর্ত্রী তথা গৌতম বাবুর স্ত্রী মনিকা দাস। তিনি বলেন, ‘ প্রতিবছরই ওনার জন্মদিন পালন করা হলেও এবারেরটা স্পেশাল। কর্তার সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনের শুভ কামনা জানতে এবার বিশেষ আয়োজন করেছি আমরা। ৫০ রকমের নানান পদ রান্না করে তার জন্মদিনের পাত সাজানো হয়েছে। নিমন্ত্রিতদের জন্যও একাধিক নানান পদের রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সকাল থেকে আমার বোন, বৌদি, মেয়ে থেকে শুরু করে বাড়ির সবাই এই সমস্ত রান্না করেছি। খুব আনন্দ হচ্ছে। পরিবারের সবাইকে এইভাবে একসঙ্গে পাওয়ার খুশি বাড়ির সবাই উপভোগ করছি।