ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: এতদিন ফি বছরের বন্যায় ভেঙে জলের তোরে ভেসে যেতো খড়ি নদীর উপর অস্থায়ী কাঠের সেতু। চরম সমস্যায় পড়তেন দুটি ব্লকের প্রায় দশ বারোটি গ্রামের মানুষ। বন্ধ হয়ে যেত সম্পূর্ন যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও পাকা সেতু এখনও তৈরি হয়নি। তবে কয়েকমাস আগে ইরিগেশন দপ্তর থেকে বর্ধমান ১ ব্লক ও মন্তেশ্বর ব্লকের মাঝে খড়ি নদীর উপর একটি লোহার সেতু তৈরি করে দেওয়ায় চলতি বছরে সমস্যা অনেকটাই মিটেছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
তবে সেতুর সমস্যা মিটলেও ফের নতুন সমস্যার সম্মুখীন এই দুটি ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ। চলতি বর্ষায় মন্তেশ্বর ব্লকের শুশুনিয়া পঞ্চায়েতের পশ্চিম মামুদপুর থেকে বর্ধমান ১ব্লকের বন্ডুল পঞ্চায়েতের ভান্ডারডিহি যাবার পথ কার্যত বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। এই দু কিলোমিটার রাস্তা দিয়েই খড়ি নদী পার করে দুটি ব্লকের মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। পুজোর আগে রাস্তার এমন বেহাল অবস্থায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাম আমলে এই রাস্তায় মোরামের যে কাজ হয়েছিল তারপর থেকে এই রাস্তায় এক ফোঁটা মাটিও পড়েনি। কিছুদিন আগে রাস্তার খানাখন্দ এবং গর্ত বোজাতে ইটভাটার ছাই, মাটি দিয়ে মেরামতের চেষ্টা করা হয়েছিল পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতেও কিছু লাভ হয়নি। বরং বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা আরও বিপদজনক হয়ে উঠেছে।
টোটো, মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াতের সময় প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে উল্টে গিয়ে বিপদে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এই রাস্তা দিয়ে যেতেই ভয় পাচ্ছে স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা থেকে নিত্য নানান কাজে যাওয়া মানুষজন। মন্তেশর ব্লকের শুশুনিয়া পঞ্চায়েতের বাউই, পশ্চিম খরমপুর, রাজগাছি , মামুদপুর, গোপালনগর, সরিষাডাঙ্গা, বোলপুরডাঙ্গা প্রভৃতি গ্রামের মানুষের বর্ধমান সদরে যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগকারী রাস্তা এটাই। রাজগাছির বাসিন্দা শোভন রায় বলেন,” এই এলাকায় কোন হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল নেই, তাই এলাকার সমস্ত ছেলেমেয়েদেরকে এই রাস্তা পেরিয়ে বর্ধমান ১ ব্লকের কুরমুন এবং ভান্ডারডিহিতে যেতে হয়। রাস্তার এই অবস্থা দেখে স্কুল পড়ুয়ারা স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতদিন খড়ি নদীর ওপর কাঠের সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম অসুবিধার মধ্যে থাকতো হতো। এখন লোহার সেতু হওয়ায় কিছুটা সুরাহা হয়েছে এলাকার মানুষের। তবে সেতু পেরিয়ে বিভিন্ন গ্রামে যাবার মূল রাস্তার যা অবস্থা তাতে মানুষ আতংকের মধ্যে রয়েছে। বৃষ্টি হলে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এই রাস্তা। “
শুশুনিয়া পঞ্চায়েত প্রধান পার্থ ঘোষ বলেন,” ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদে এই রাস্তা তৈরি করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। জেলা পরিষদ থেকে রাস্তা পরিদর্শন করে গেছেন পূর্ত কর্মাধক্ষ্য উত্তম সেনগুপ্ত। খুব শীঘ্রই এই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হবে।” উত্তম সেনগুপ্ত বলেন,” আমি নিজে এই রাস্তা দেখে এসেছি। দু কিলোমিটার পিচের রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে। পুজোর আগেই এই রাস্তার জন্য টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করে এই রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে। খুব তাড়াতাড়ি এই রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যাবে।”