ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: চার বছরের পুত্র সন্তান কে সঙ্গে নিয়ে সন্তান সম্ভবা স্ত্রীকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার দেখাতে এসে মর্মান্তিক এক পথ দুর্ঘটনায় সন্তানহারা হয়ে পড়লেন দম্পতি। এই ঘটনায় চরম শোকের ছায়া নেমে এসেছে মেমারি থানার সীতারামবাটি এলাকায় ওই দম্পতির পরিবারে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মেমারি থানারই সীতারামবাটির বাসিন্দা সুরেশ সোরেন এদিন তাঁর সন্তান সম্ভবা স্ত্রী কে স্থানীয় গোবিন্দপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন চেক আপ করাতে। তাদের সঙ্গে ছিল তাদের চার বছরের একমাত্র ছেলে শিবমও।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভিড় থাকায় ছোট্ট শিবম কান্নাকাটি করতে শুরু করে। ছেলের একঘেঁয়েমি কাটাতে স্ত্রী কে সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে সুরেশ বাবু ছেলেকে স্কুটিতে চাপিয়ে একটু ঘুরিয়ে আনতে যান। সেই সময়ে মেমারির মায়ের কোল এলাকায় একটি মোটরভ্যানের সঙ্গে তাদের স্কুটির সংঘর্ষ হয়। বাবা ও ছেলে দুজনেই রাস্তায় ছিটকে পড়ে যায়। স্থানীয় মানুষ ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে জরুরি বিভাগের থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক শিবম কে মৃত ঘোষণা করেন। সুরেশের হাত পা, মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত থাকায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে মেমারি হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবার স্কুটির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ছোট্ট শিবম। একটু জোরেই যাচ্ছিল স্কুটি টি। আচমকা একটি মোটরভ্যান অন্যদিকে থেকে সামনে চলে আসায় ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। অন্যদিকে দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে সুরেশ বাবুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে তড়িঘড়ি মেমারি হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। পুলিশ মোটরভ্যানটি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি চালক কে আটক করেছে। দ্বিতীয় সন্তানের আশায় চিকিৎসা চলাকালীন প্রথম সন্তানের এইভাবে মৃত্যুর খবরে রীতিমত শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন মা। হসপিটালের বিছানায় শুয়ে শুধুই চোখের জল ফেলে চলেছেন সদ্য পুত্রহারা মা।