স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য পরিসেবাকে কলুষিত করছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক! মুখ পুড়ছে সরকারের, অপসারণের দাবী গলসি এলাকাবাসীর

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: সরকারি স্বাস্থ্য পরিসেবা কে কলুষিত করছে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক(BMOH), এমনই অভিযোগ তুলে বিএমওএইচ এর অপসারণের দাবী তুললেন এলাকার স্থানীয় মানুষজন। বিষয়টি নিয়ে তারা পূর্ব বর্ধমান জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জেলাশাসক, জেলা সংখ্যালঘু দপ্তর ও জেলা পরিষদ সহ একাধিক জায়গায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্বাক্ষরকারীদের দাবী, আগে পুরসা হাসপাতালে এসে প্রতিদিন সাত আটশো রোগী উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পেতেন। এখন সেই সব বন্ধ। আগে এই হাসপাতালে বছরে ১০০০ প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারী করানো হত। বর্তমানে তা কমে ৬০ থেকে ৭০ নেমে গেছে। আগে ৩ টি ১০২ অ্যাম্বুলেন্স দাড়িয়ে থাকতো জরুরি পরিষেবা দেওয়ার জন্য। এখন প্রসূতি মায়েরা সময়ে ১০২ অ্যাম্বুলেন্স পায়না বলে অভিযোগ উঠছে। আগে বছরে ৫০০ টি স্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অপারেশন হতো। সেটাও কমে ৩০ থেকে ৪০শে ঠেকেছে।

হাসপাতালের বিএমওএইচ পায়েল বিশ্বাস কে হাসপাতালের সমস্ত অব্যবস্থার কথা বারবার বলার পরও অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি বলে দাবী তাদের। এমনকি লিখিত অভিযোগে তারা জানিয়েছেন, নতুন বিএমওএইচ ডাক্তার পায়েল বিশ্বাসের জন্যই পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সরকারী পরিসেবা কার্যত শিকেয় উঠেছে। ফলে জেলার নামকরা পুরসা হাসপাতালের সুনাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরিসেবা না পেয়ে জেলা হাসপাতালে চলে যাচ্ছে এলাকার প্রচুর রোগী। ফলে পুরসা হাসপাতালের এই অবস্থা কারণে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে।

অভিযোগে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল একটি লেবার রুম তৈরির জন্য। যেটি ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পূর্ন  হবার কথা ছিল। সেই কাজ বন্ধ হয়ে থাকলেও বিএমওএইচ কোন উদ্দ্যোগ নেননি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের ৫২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে একটি ব্লক পাবলিক হেলথ ইউনিট (ল্যাব) তৈরী করা হয়েছিল। যার ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করার পরও রোগীরা সেই ল্যাবের পরিসেবা পাচ্ছেন না। ল্যাবের কর্মীরা একবছর ধরে বসে বসে বেতন নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে অভিযোগে। এমনকি মেশিন ও যন্ত্রাংশও নাকি পরে পরে নষ্ট হচ্ছে। এলাকাবাসীদের দাবী, সরকারের দেওয়া পরিসেবা থেকে তারা কার্যত বঞ্চিত হচ্ছেন।

এছাড়াও অভিযোগে জানানো হয়েছে, আগে এলাকার ৩৭ টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যেত। বিএমওএইচ ডাক্তার পায়েল বিশ্বাস আসার পর তা একপ্রকার বন্ধই হয়ে গেছে। এলাকার ভরতপুর ও লোয়া পাইমারী হেলথ সেন্টারে সপ্তাহে ছয়দিন ডাক্তার বসার কথা থাকলেও সেখানে ডাক্তার বাবুরা দুইদিন ডিউটি করেন। ফলে সেখানকার গরীব মানুষ সরকারি পরিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তারা। জানা গেছে, এক সময় পুরসা হাসপাতালে প্রচুর নামডাক ছিল। সেই নামডাক নষ্ট হতে বসেছে। তাই এলাকার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে বিএমওএইচ এর অপসার‌নের দাবী তুলেছেন।

এদিকে পুরসা হাসপাতালের নানান অব্যবস্থার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের করা অভিযোগের বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছেন, ‘ অভিযোগ এখনও আমি হাতে পাইনি। হয়তো অফিসে রিসিভ সেকশনে জমা পড়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হবে। যদি অভিযোগের সত্যতা থাকে তাহলে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হবে।’