---Advertisement---

শিয়রে লোকসভা ভোট, বর্ধমানে বহিষ্কৃত বিজেপি নেতার সঙ্গে চায়ে পে চর্চায় খোদ সাংসদ, আলোড়ন

Souris Dey

Published

সৌরীশ দে, বর্ধমান: ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য জুড়ে বিজেপি জেলার সংগঠন গুলোকে আরো মজবুত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দলের একাংশ সূত্রে খবর, একদিকে যেমন বহিষ্কৃত নেতাদের অনেককে দলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে দলীয় স্তরে আলাপ আলোচনা চলছে, পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে দলের সাথে দূরত্ব তৈরি করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ন কর্মীদের ফের বুঝিয়ে দলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে সম্প্রতি নানান অভিযোগ সামনে এসেছে। এমনকি খোদ সভাপতিকে অপসারণের দাবিতে দলেরই একাংশ কর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন করা থেকে শহরে পোস্টার পর্যন্ত সাঁটিয়ে ছিল। এই অবস্থায় আগামী বছর লোকসভা ভোটে বর্ধমানের এই আসন আদৌ বিজেপি ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়েই দলের অন্দরে ধন্দ তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আর ঠিক এই পরিস্থিতিতে সোমবার সন্ধ্যায় বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুরিন্দর সিং অহলুয়ালিয়া কে দেখা গেল বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার বহিষ্কৃত দাপুটে নেতা শ্যামল রায়ের সঙ্গে চায়ে পে চর্চায়! তাও আবার সেটা শ্যামল রায়ের বর্ধমান গুসকরা রোডের ওপর তার নিজের ধাবা তেই।

সূত্রের খবর, সাংসদ বহিষ্কৃত নেতা শ্যামল রায়ের ধাবায় চা খেতে গিয়েছিলেন। এদিন ভাতারে একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সাংসদ। সেখান থেকে ফেরার পথে চা খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে রাস্তায় শ্যামল রায়ের হোটেলে এসে দাঁড়ান। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ দুজনের মধ্যে কথাবার্তা হয়। যদিও এই সাক্ষাৎ কে দুই নেতাই আকস্মিক ও সৌজন্যমূলক বলেই দাবি করেছেন। এরমধ্যে রাজনীতির কোন বিষয় ছিলনা। অন্যদিকে শ্যামল রায় এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘সাংসদ ভাতারের একটি কার্যক্রম সেরে ফেরার পথে আমার হোটেলে চা খেতে এসেছিলেন। টাকায় মিটিয়ে দিয়েছেন। যেটুকু সময় ছিলেন সৌজন্যতার খাতিরে ওনার কাছে বসেছিলাম। আমি এই মহুর্তে দলের একজন সমর্থক মাত্র। স্বাভাবিকভাবেই সাংসদের সঙ্গে আমার কোন রাজনৈতিক আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনাই নেই।’

See also  বর্ধমানে এবার খোদ সরকারি আবাসনের তিনটি বন্ধ ফ্ল্যাটে চুরি, শহরের নিরাপত্তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন, আতঙ্ক

পাশাপাশি সাংসদ জানিয়েছেন, ‘ একটি দলীয় কর্মসূচি সেরে ফেরার পথে চা খেতে একটি হোটেলে দাঁড়িয়েছিলাম। ঘটনাচক্রে জানতে পারি হোটেলটি আমাদের দলেরই একসময়ের খুব গুরুত্বপূর্ন এক নেতা শ্যামল রায়ের। এর মধ্যে কোন রাজনীতি নেই। শ্যামলের সঙ্গে অনেকদিন পর দেখা হল, তাই চা খেতে খেতে কিছুক্ষণ গল্প করেছি। দুজন মানুষের সঙ্গে দেখা হলে ভাব বিনিময় করাটা তো আমাদের সৌজন্যতা। আর তাছাড়া আমাদের দলের একটা শৃংখলা রয়েছে। কেউ যদি সেই শৃংখলা ভঙ্গ করেন, দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশ মতো সেই নেতা, কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়। অনেকক্ষেত্রে দল মনে করলে সেই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনাও করে।শ্যামল রায় তো আর বিজেপি ছেড়ে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়নি, তাহলে সাক্ষাৎ হলে অসুবিধা কোথায়?’

এদিকে আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে বহিষ্কৃত বিজেপি নেতার সঙ্গে খোদ সাংসদ কে একই টেবিলের দুই প্রান্তে আলাপচারিতায় দেখতে পেয়ে বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার অনেকেই রহস্য খুঁজে পাচ্ছেন। আবার এই সাক্ষাৎ কে লোকসভা ভোটের আগে জেলা বিজেপির অন্দরের বহু হিসাব নিকাশ উল্টে দেবে বলেও মনে করছেন দলেরই একটা অংশ। কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান – দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে সুরিন্দর সিং অহলুয়ালিয়া কে জিতিয়ে আনার পিছনে এই শ্যামল রায়ের ভূমিকা ছিল বিরাট গুরুত্বপূর্ন। আর সেই কারণেই ২০২৪ এর লোকসভার আগে শ্যামল রায়ের মত নেতাদের ফের দলে ফিরিয়ে আনতে পারলে আখেরে যে দলেরই উপকার হতে পারে সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই সাংগঠনিক পর্যায়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---