---Advertisement---

গলসি জুড়ে বালির বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে এবার সোচ্চার হলেন খোদ সাংসদ, আলোড়ন

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসি: পূর্ব বর্ধমানের  গলসি থানার অন্তর্গত দামোদর নদের পাড়ে বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে বেআইনি বালির কারবার ও বালির মজুদ নিয়ে এবার রীতিমত সোচ্চার হলেন বিষ্ণুপুর তথা এলাকার সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার বালি চুরি রুখতে পুলিশ কে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। এবার সাংসদ সৌমিত্র খাঁ গলসি জুড়ে বালির অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘ অবিলম্বে পুলিশ ও প্রশাসন যদি গলসি তে বেআইনি বালির কারবার বন্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ না করে তাহলে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যতদূর যেতে হয় তিনি যাবেন। প্রয়োজনে এই বিষয় নিয়ে সংসদেও সোচ্চার হবেন বলেও জানিয়েছেন সাংসদ। স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংসদের তাঁর এলাকার বালির অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে খোদ সংসদে সোচ্চার হওয়ার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত গলসির গোহগ্রামের বন্যবুড়ি তলা থেকে সুন্দলপুর মোড় পর্যন্ত ও রমগোপালপুর মোড় থেকে জাগুলি পাড়ার মোড় পর্যন্ত দামোদর নদের বাঁধের রাস্তার দুদিকে বিক্ষিপ্ত ভাবে বিপুল পরিমাণ বালি নদী থেকে চুরি করে মজুদ করা হয়েছে। এমনকি শিল্ল্যা ঘাটের বাবলাতলা এলাকায় নদীর বাঁধের উপরেই মজুদ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ বালি বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই খবর ইতিমধ্যেই ফোকাস বেঙ্গলে প্রকাশিত হয়েছে। আর তারপরই সাংসদ এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি গলসি থানার অফিসারকে এই বেআইনি কারবার কিভাবে চলছে, এবং অবিলম্বে এই কারবার বন্ধ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানায়।

এরপরই গলসি থানার পুলিশ নড়েচড়ে বসে। বুধবার সন্ধ্যার পর অভিযানে নামে পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসীদের অধিকাংশের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। এমনকি পুলিশ এলাকায় ঢোকার পরও প্রায় ৫০টি বালির গাড়ি মজুদ ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু কোনো গাড়ি কেই আটক করা বা কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই প্রায় ৫০টি গাড়ি বালি বোঝাই করে বেরোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে পুলিশ কোনো পদক্ষেপই করেনি এদিন। এই নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

See also  নব দম্পতিকে নিয়ে প্রেস স্টিকার সাঁটানো গাড়ি আটক বর্ধমানে, জরিমানা

গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কানন মাঝি জানিয়েছেন, ‘এলাকায় অবৈধ ভাবে বালি পাচারের খবর পুলিশ কে জানানোর পর ঘটনাস্থলে গলসি থানার পুলিশ এলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। উল্টে গাড়ি ঘুরিয়ে এলাকা থেকে বেরিয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই রাতের অন্ধকারে প্রতিদিন যারা নদী থেকে বালি তুলে পাচারের সঙ্গে যুক্ত অসাধু লোকজন রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন পদক্ষেপ না করায় স্থানীয় মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে।’ স্থানীয় এলাকাবাসীদের অনেকেই জানিয়েছেন, এলাকায় বেআইনিভাবে বালি পাচারের সঙ্গে স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুক্ত রয়েছে। এমনকি এদের মধ্যে সিভিক ভলেন্টিয়ারও রয়েছে। মূলত এলাকার আইন শৃংখলা দেখার কাজ যাদের উপর থানা থেকে দেওয়া থাকে তারাই এখানে অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকলে যা হয় এদিন সেটাই ঘটেছে।

স্থানীয়দের একাংশ অনুমান করছে, অবৈধ বালি কারবারিদের সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের অশুভ আতাঁত রয়েছে। আর সেই কারণেই সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বর্ষার সময়েও নদী থেকে বালি চুরি করে পাচার চালালেও দোষী ব্যক্তিদের ধরার ব্যাপারে পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এমনকি চোখের সামনে বেআইনি কারবার চললেও তা বন্ধ করতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই এই বালি মাফিয়ারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। লুট হয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ, আর এরই সঙ্গে সরকারি রাজস্ব।

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---