ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: গলসির পুরসা গ্রামে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল মঙ্গলবার । দাউদাউ করে জ্বললো তৃণমূল দলীয় কার্যালয়। আগুন দেখে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন গ্রামের বহু মানুষ। জানা গেছে, গতকাল থেকে একটি গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিবাদে জড়ায় গলসি ১ নম্বর ব্লকের পুরসা এলাকার তৃণমূলের কমল সেখ ও লালন সেখ গোষ্ঠীর লোকজন। গ্রামের পাঁচপাড়ার বাসিন্দা তথা কমল ঘনিষ্ঠ ডালিম সেখ তার বাড়ির সামনে একটি গাছ কেটে ফেলেন। সেই নিয়ে লালন গোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে বিবাদ বাধে কমল গোষ্ঠীর লোকদের।
এরপর এদিন সন্ধ্যায় লালন গোষ্ঠীর পার্টি অফিসে আচমকা আগুন লাগে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে দলীয় কার্যালয়। এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর নামে অভিযোগ তোলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গলসি থানার পুলিশ। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। দমকলের বেশ কিছুক্ষণের প্রচেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আসে। জানা গেছে, লালন সেখ গলসি ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জনার্দন চ্যাটার্জি ও পার্থ মণ্ডল ঘনিষ্ঠ। এদিকে কমল সেখ প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন ঘনিষ্ঠ।
ঘটনায় আহত হয়েছেন লালন ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কর্মী মইমুল হোসেন মল্লিক। তিনি বলেন, তিনি চায়ের দোকান থেকে রাস্তা পেরোনোর সময় কমল গোষ্ঠীর বেশকিছু লোকজন তাকে মারধর করে। তাদের হাতে টাঙ্গি ও লাঠি ছিল। ঘটনায় তার ডান পায়ে চোট লাগে। তার পা ফেটে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে।এদিকে কমল ঘনিষ্ঠ ডালিম সেখ বলেন, ’ মদ্রাসার কাজে একটি জেসিবি তাদের পাড়ায় ঢুকেছিল। কয়েকটি গাছে জেসিবি লেগে গাছ হেলে যায়। সেই হেলে পড়া একটি গাছ তিনি কাটলে লালন ও রবিউল মল্লিক গোষ্ঠীর লোকজন তাকে হুমকি দেয়। এরপর এদিন দুপুরে কুড়ি, পঁচিশ জন তার বাড়িতে আসে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী সাধন সেখ তার মুখে ঘুষি মারে। লালনের লোকজনরা তাকে তুলে নিয়ে যায় ও মারধর করে। লালনের লোকেরাই পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়েছে বলে দাবী করেন ডালিম।
বিষয়টি নিয়ে পোতনা পুরসা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি রবিউল মল্লিক বলেন, ’ডালিম সেখ পঞ্চায়েতের গাছ কেটেছে, তাই তাকে বলা হয়েছিল পঞ্চায়েতের গাছ তুমি কাটলে কেন। সেটার হিংসাতেই হয়তো পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়েছে। তার বিরুদ্ধে বনদপ্তরে অভিযোগ হয়েছে।’ তার দাবী, যারা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগায় তারা তৃণমূল নয়, দুস্কৃতী। এদিকে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগার পিছনে বিদ্যুৎের হাই টেনশন তার কেটে পড়াকেই দায়ি করেছেন অনেকে। আগুন লাগার পর বিকট আওয়াজ শুরু হয়। আওয়াজের জেরে হকচকিয়ে যান অনেকেই। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।