ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, গলসি: বছর দুয়েক আগে বন্ধুর আবদারে কয়েকদিনের জন্য আরেক বন্ধু তার নিজের স্কর্পিও গাড়িটি ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলেন। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও বীরভূম জেলার কাঁকরতলা থানার, বনসায়ের গ্রামের বাসিন্দা শান্তিময় মন্ডল তার নিজের গাড়ি আর ফেরত পাচ্ছিলেন না। দেখতে দেখতে প্রায় দু বছর হয়ে যায়। এমনকি যাকে গাড়িটি দিয়েছিলেন অর্থাৎ গলসির বন্দুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা তার বন্ধু জহরলাল মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছিলেন না তিনি। মাঝে নিজের সখের কালো স্করপিও গাড়িটির জন্য বহু খোঁজাখুঁজিও করেন শান্তিময় বাবু। কিন্তু হদিস পাননি। শেষমেষ তিনি আইনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হন।
শান্তিময় বাবু জানান, দুইবছর পূর্বে তিনি তার নতুন কালো স্করপিও গাড়িটি গলসির বন্দুটিয়া গ্রামের তার বন্ধু জহরলাল মল্লিককে কয়েকদিনের জন্য চাপতে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি তার গাড়ি আর ফেরত পাচ্ছিলেন না। বিভিন্ন ভাবে খোঁজ চালিয়েও গাড়ির হদিশ না মেলায় কয়েকমাস পূর্বে তিনি আইনের দ্বারস্থ হন। আদালত এই কেসের তদন্তের জন্য গলসি থানার পুলিশ কে নির্দেশ দেয়। আর তারপরই গলসি থানার অফিসার ইন চার্জ অরুন সোম একটি টিম তৈরী করে তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গাড়িটিতে পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে কোলকাতা, রাজারহাট সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে জহরের লোকজন। গাড়িটিকে খুঁজে পেতে একাধিক জায়গায় পৌছে তল্লাশিও শুরু করে পুলিশ। গোপনে হানাও দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি জায়গায়। কিন্তু এরইমধ্যে পুলিশের গতিবিধির খবর জহরলালের লোকেদের কাছে কোনোভাবে পৌঁছে যায়। আর এরপরই বিপদ বুঝতে পেরে জহরের লোকেরা গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে গাড়িটি গলসির বন্দুটিয়া এলাকায় ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সেই রাতেই গাড়িটিকে উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২৫ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বুধবার গাড়িটির আসল মালিক শান্তিময় মন্ডলের হাতে গাড়িটি তুলে দেয় পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের তৎপরতায় নিজের গাড়ি ফেরত পেয়ে শান্তিময় বাবু গলসি থানার ওসি সহ সমস্ত পুলিশ কর্মীদের কাজের ভুয়সী প্রসংশা করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এরপর অভিযুক্ত জহরলাল মল্লিক ও তার সঙ্গী সাথীদের ধরতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই গাড়িটি নিয়ে কোনো অপরাধ সংগঠিত করা হয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে পুলিশ।