festival

৬০ টি প্রকরণের আম নিয়ে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭জুন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে দ্বিতীয় ফল বৈচিত্র্য মেলা

অমিত ভট্টাচার্য,কল্যাণী: আম খেতে ভালোবাসে না এমন বাঙালি খুব কম আছেন। আম বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় ফল। সারা বছর বাঙালি আমের মরশুমের অপেক্ষায় প্রতীক্ষা করে থাকে। এবার বিশেষ করে সেই আম নিয়েই আয়োজিত হতে চলেছে দ্বিতীয় বর্ষের ‘ফল বৈচিত্র্য মেলা’। আগামীকাল অর্থাৎ ৭ জুন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে এই ফল বৈচিত্র্য মেলা।

পূর্ব ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় আমের বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কেন্দ্রটি রয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ICAR-AICRP on Fruits বা সর্ব ভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা প্রকল্পের মোহনপুর কেন্দ্রই এই মেলার আয়োজক। প্রায় ৪০ জন ফলচাষী ও বাগানবিলাসী এই মেলায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আয়োজকদের তরফে জানা গেছে। প্রায় ৬০ টি প্রকরণের আম প্রদর্শিত হবে এই মেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদস্থ আধিকারিক ও শিক্ষাবিদেরা উপস্থিত থাকছেন ফল বৈচিত্র্য মেলায়। থাকছে প্রতিযোগিতার আসরও।

আটটি ক্যাটেগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যাবে। ক্যাটেগরিগুলি হচ্ছে ১) দেশী/স্থানীয়/লৌকিক জাত ২) ভারতের অর্থকরী আমের জাত ৩) সঙ্কর জাতের আম ৪) বিদেশী জাতের আম ৫) বহু মরশুমী বা দোফলা/বারমাসী আম ৬) আমের প্রক্রিয়াজাত পণ্য ৭) আম ব্যাতিরেকে অন্য ফল ৮) আম ব্যাতিরেকে অন্য ফলের সংরক্ষিত পণ্য।

এই প্রকল্প ছয়টি ফলের উপর বিশেষ গবেষণা সম্পন্ন করে চলছে। আম, লিচু, পেয়ারা, কলা, কাঁঠাল এবং পেঁপে। তাছাড়াও ড্রাগন ফল, মুসুম্বি লেবুর সংহত বাগান এখানে রয়েছে। রয়েছে ৩৫ টি প্রজাতির গৌণ ফলের বিবিধ বৈচিত্র্যের বাগিচা। নদীয়া জেলায় অবস্থিত এই গবেষণা কেন্দ্র কৃষকদের কাছে একটি অমিত উৎসাহের নাম। সেই কেন্দ্রে উৎপাদিত ফল বৈচিত্র্যের ঝাঁপিও এখানে প্রদর্শিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প আধিকারিক অধ্যাপক দিলীপ কুমার মিশ্র।

তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ‘কৃষকদের জন্য যাবতীয় আয়োজন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী ICAR-এর তত্ত্বাবধানে আমরা গবেষণা কাজ চালাই। এই মেলা কৃষকদের সঙ্গে আমাদের সংযোগ বাড়িয়ে তোলে। কোন জাতটি কেন চাষ করবেন, সে বিষয়ে কৃষক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন এই মেলায় এসে। ছাত্র ও গবেষকেরাও ফল বৈচিত্র্য বিষয়ে জ্ঞানলাভ করেন।’

এই মেলার জন্য আম চাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিশিষ্ট উদ্যানবিদ অধ্যাপক ড. কল্যাণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “যারা এই ফল গবেষণা কেন্দ্রে পূর্বে প্রশিক্ষণ নিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন অথবা প্রেরণা নিয়ে ফলচাষ শুরু করেছেন তাদেরই বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমের বিবিধ প্রজাতি কে ফের ফিরিয়ে আনার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা বাংলা থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।” ৭ জুন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনপুর ক্যাম্পাসে সকাল দশ-টা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই মেলা। কৃষক, বাগানবিলাসী, ছাত্র শিক্ষক, গবেষক, আধিকারিক, সদর্থক জনতা সকলকেই এই মেলায় স্বাগত জানিয়েছেন প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা।

Recent Posts