রাজনীতি

বিধায়ক ও দলের জেলা সম্পাদক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব, মঙ্গলকোটে তৃণমূল পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলো পুলিশ, উত্তেজনা

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মঙ্গলকোট: সদ্য ভোট মিটেছে। ফলাফল ঘোষণা হতে এখনও বেশ কিছুদিন বাকি। আর তার আগেই তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব চরম আকার নিলো মঙ্গলকোট ব্লকে। এই নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। অভিযোগ, বিধায়ক ঘনিষ্ট তৃণমূল নেতা তথা মঙ্গলকোট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রহিম মল্লিকের নেতৃত্বে শুক্রবার সকালে একদল তৃণমূল কর্মী সমর্থক মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে ঢুকে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শান্ত সরকারের অনুগামীদের মারধর করে বের করে দিয়ে পার্টি অফিস দখল করার চেষ্টা করে।

পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়। আগামী ৪জুনে পর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এই পার্টি অফিস খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শান্ত সরকার অভিযোগ করেছেন,’ মঙ্গলকোট বিধানসভার বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর নেতৃত্বে রহিম মল্লিকের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে এদিন। জোর করে পার্টি অফিস দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। চর, থাপ্পড় মেরে আমাদের কয়েকজন কর্মীকে পার্টি অফিস থেকে বের করে দেয় ওরা।’ যদিও এই বিষয়ে রহিম মল্লিক মুখ না খুললেও বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী জানান, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে তৃণমূলের কর্মীরা বসতে গেলে তাতে ক্ষতি কি। দলের পার্টি অফিস কে নিজের সম্পত্তি মনে করলে তো হবে না। সেখানে দলের কর্মী, সমর্থকরা তো যাবেই। এই বিষয়ে জেলা নেতৃত্ব কে জানিয়েছি। ভোটের ফল বেরোনোর পরই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত মঙ্গলকোট ব্লকে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। দলেরই একাংশ এবং এলাকাবাসীদের অনেকেই অভিযোগ করেছে, মঙ্গলকোট ব্লকের অজয় নদী জুড়ে যে একাধিক বেআইনি বালি খাদান রয়েছে তার দখলদারি ও ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে শাসক দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। অভিযোগ, খোদ উপপ্রধান রহিম মল্লিক এই অবৈধ বালি ঘাটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তার মদতেই মঙ্গলকোট ব্লক জুড়ে এই বেআইনি বালির কারবার চলে বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকি দলেরই একটি অংশ খোদ বিধায়ক ও উপপ্রধানের বালির অবৈধ কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে করেছেন।

শান্ত সরকার এদিন অভিযোগ করেছেন, ‘ বিধায়ক লোকসভা নির্বাচনে কাজের জন্য দলের কোন পুরনো কর্মীকে ডাকেনি। নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করেছেন। আমরা তৃণমূল দলটাই করি। আমাদের সবাইকে ভোটে বসিয়ে রেখে এলাকার কিছু গুন্ডা, মস্তান, সমাজবিরোধী দের নিয়ে ভোট করিয়েছেন। যে পার্টি অফিস টি আজ দখল করার জন্য ওরা এসেছিল সেটি আমার ও পরিবারের নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। হটাৎ করে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর জন্যই পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি ও রাজ্য নেতৃত্ব কে সমস্ত ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছি।