বর্ধমানে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনেই গায়ে আগুন লাগিয়ে সপরিবারে মরার হুমকি, আলোড়ন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: মাথার উপরে প্রখর রোদ, তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই পিপে ভর্তি কেরোসিন তেল আর নারকেল দড়ি নিয়ে ৭০ঊর্দ্ধ এক বৃদ্ধা তার ছেলে ও নাতি কে নিয়ে ধর্নায় বসেছেন খোদ পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসকের অফিসের গেটে।  উদ্দেশ্য – সমস্যার সমাধান না হলে গায়ে আগুন লাগিয়ে সবাই আত্মহত্যা করবেন সেখানেই। শুক্রবার দুপুরে আচমকা এই ঘটনায় হুলুস্থূল পড়ে যায় বর্ধমানের কোর্ট কম্পাউন্ড চত্বরে জেলা শাসকের অফিসের সামনে।

বিজ্ঞাপন

ধর্ণারত রায়না থানার মেড়াল গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণসখী চন্দ্র বলেন,’ আমার বসত ভিটার পাশেই লক্ষণ চন্দ্র, গৌতম চন্দ্র ও তপন চন্দ্র যাদের পিতার নাম হরিশ চন্দ্র কিছু গাছপালা লাগিয়েছেন। সেইসব গাছের ডালপালা আমার বাড়ির ছাদের এবং দেওয়ালে বিস্তার করেছে। ফলে বাড়ির দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি আমার বসত ভিটে তে থাকা একটি ডোবা কে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। এই সমস্যার কথা একাধিকবার স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন কে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপার কেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। তারপরেও অভিযুক্তরা নানাভাবে আমাকে, আমার ছেলে বিশ্বজ্যোতি চন্দ্র, নাতি অর্ঘ্যদ্বীপ চন্দ্র কে হেনস্থা করছে। এইভাবে বেঁচে থাকার থেকে মরে যাওয়াই ভাল, তাই আজ জেলা শাসকের কাছে এসেছি। যদি সমস্যার সমাধান হয় ভাল, নাহলে এখানেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যা করবো সবাই।’

বৃদ্ধার ছেলে বিশ্বজ্যোতি চন্দ্র বলেন,’ মা বয়সের ভারে ঠিক করে হাঁটা চলা করতে পারেন না। এই অবস্থায় প্রতিদিন বাড়ির পাশের লক্ষণ চন্দ্র, গৌতম চন্দ্র ও তপন চন্দ্ররা নানাভাবে আমাদের উপর অত্যাচার করছে। এমনকি রায়না থানায় মাকে নিয়ে গেলে প্রায় সাত ঘণ্টা বসিয়ে রেখেও কোন কথা শোনেনি পুলিশ। এই অবস্থায় আমরা জেলা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছি। এরপরও যদি কিছু না হয় আমরা কেরোসিন তেল, নারকেল দড়ি, দেশলাই নিয়ে এসছি। আগুন লাগিয়ে সবাই মরবো।’ 

এদিকে জেলা শাসকের অফিসের সামনেই গায়ে আগুন লাগিয়ে সপরিবারে আত্মহত্যার হুমকির ঘটনার খবর বর্ধমান থানায় পৌঁছতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ, প্রশাসন। তড়িঘড়ি বর্ধমান থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধর্নারত চন্দ্র পরিবারের সকলকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে তাঁরা ধর্না থেকে উঠে পড়েন। পুলিশ জানিয়েছে, রায়না থানার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে সমস্যার বিষয়ে। বৃদ্ধা সহ ছেলে ও নাতি কে পুলিশের সহযোগিতায় রায়না থানায় পাঠানো হয়েছে। অবিলম্বে মূল সমস্যার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে যাতে সমাধান করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদিও পুলিশের হস্তক্ষেপে ধর্না থেকে উঠে পড়লেও বৃদ্ধা কৃষ্ণসখী চন্দ্র বলেন, ‘ এরপরও যদি সমস্যা না মেটে তাহলে আবার আমরা পুরনো অবস্থানেই ফিরে আসবো।’

আরো পড়ুন