ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অবৈধ বালি খাদান বন্ধে প্রশাসন ও পুলিশ কে কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের পরই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চলবলপুর এলাকায় দামোদর নদে একটি বালি ঘাটে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি বালি তোলার মেশিনও বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। যদিও পরবর্তীতে ধৃতরা সকলেই আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। ধৃতদের বেশির ভাগই লরিচালক। এছাড়া রয়েছেন খাদানের ম্যানেজার এবং দামোদর থেকে বালি তোলার কাজে যুক্ত মেশিনচালকেরা। ধৃতদের কারও বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর, বীরভূমের খয়রাশোল, হুগলির পাণ্ডুয়ায়। আবার কারও নদিয়ার তেহট্ট, পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় ও জামালপুর এলাকায় বাড়ি বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য বিচারক ধৃতদের মধ্যে তিনজনকে পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, জামালপুর থানার বেরুগ্রাম অঞ্চলের চলবলপুরে দামোদর থেকে মেশিনের সাহায্যে অবৈধ ভাবে বালি তুলে তা লরিতে ভরে পাচারের প্রস্তুতি চলছিল। সেখানে মজুদ বালির চালান ব্যবহার করে নদী থেকে বালি তুলে গাড়িতে লোড করা হচ্ছিলো। সেই খবর পেয়েই অভিযান চালায় জামালপুর থানার পুলিশ। হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় সকলকে। যদিও যে বালি ঘাটে পুলিশ গত ২৪নভেম্বর অভিযান চালিয়েছিলো, প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সেই খাদান টি জেলাশাসক অনুমোদিত বৈধ ঘাট। নদী থেকে বালি তোলা, মজুদ ও পরিবহনের সরকারি বৈধ অনুমতি রয়েছে। তবে ২৭তারিখ ঘাট টির বৈধতা অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। জানা গেছে, গত ১৮নভেম্বর বর্ষাকালীন নদ নদী থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় জেলাশাসক। আর তারপরই নদী থেকে বালি তোলার কাজ শুরু করেছিল ঘাট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযোগ, আচমকা জামালপুর থানার পুলিশ গভীর রাতে অভিযানে নেমে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
জামালপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক প্রত্যুষ বাগ জানিয়েছেন, ’বেরুগ্রাম অঞ্চলের চলবলপুরে পুলিশি অভিযানের বিষয়ে তার কাছে কোন তথ্য ছিলনা। যে বালি ঘাটটিতে অভিযান চালানো হয়েছে সেই ঘাট টি জেলাশাসক অনুমোদিত বৈধ বালি ঘাট। আমরা ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে জামালপুরের সমস্ত বৈধ বালি ঘাটের তালিকা পাঠিয়েছি। তবে অবৈধ ভাবে নদী থেকে বালি উত্তোলনের অভিযোগ আসলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’
অন্যদিকে বালি ঘাট টির ম্যানেজার লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ’ গত ২৭তারিখ পর্যন্ত তাদের ঘাট টি সরকারিভাবে বৈধ ছিলো। সেখানে বালি তোলা বা মজুদ করার অনুমতিও ছিলো। কিন্তু ২৪তারিখ গভীর রাতে পুলিশ আচমকা অভিযান চালিয়ে আমাদের ঘাটে এসে ৯জনকে গ্রেপ্তার করে। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। ধৃতরা মুক্তি পেয়েছে। তবে সরকার অনুমোদিত বৈধ ঘাটগুলোতে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করে অবৈধ কারবারিদের দিকে যদি পুলিশ নজর দেয় সেক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়বে। কারণ আমরা সরকারের ঘরে কোটি কোটি টাকা জমা করে বৈধভাবে ব্যবসা করি।’