---Advertisement---

‘যেমন মা, তার তেমন ছা’ তৈরির প্রশিক্ষণ দিল বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, কল্যাণী: কথায় বলে ‘যেমন মা তার তেমন ছা’ অর্থাৎ মা যেমন হবে তার সন্তানও তেমন হবে। আর সন্তান ভালো অর্থাৎ ‘সু’ সন্তান হলে সমাজ যেমন ভালো হয় তেমন উন্নত মানের গাছ থেকে কলমের মাধ্যমে তৈরি চারাগাছ ভালো হলে তার থেকে উৎপন্ন ফসলও ভালো হয়। আর এই ভাবনা থেকেই আজ কলমের চারাগাছ তৈরির প্রশিক্ষণ দিল বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সর্বভারতীয় সমন্বিত ফল গবেষণা কেন্দ্র'(ICAR-AICRP on Fruits for SCSP)।

বিজ্ঞাপন

এদিন পশ্চিমবঙ্গের ৯ টি জেলার ৫৬ জন চাষি এই শিবিরে যোগদান করেন, তার মধ্যে অনেকেই ছিলেন মহিলা চাষি। এই শিবিরে প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প আধিকারিক অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার মিশ্র, উদ্যানবিদ অধ্যাপক ড. কল্যাণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক ড. ফটিক কুমার বাউরি, উদ্যানবিদ ড. সঞ্জীব দেবনাথ, কীটতত্ত্ববিদ ড. অনামিকা কর, ও ড. দেবলীনা মাঝি। এদিন শুরুতেই ড.সঞ্জীব দেবনাথ কলার চারা তৈরির বিশেষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন। ড. কর সমন্বিত ভাবে উদ্ভিদের কীটশত্রু কীভাবে দমন করা যায় সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। জৈব পদ্ধতিতে কীভাবে কীটশত্রুদের নিধন করা যায় – সেটাও বলেন তিনি। উপস্থিত চাষিদের এই বিষয়ে শিক্ষার মূল্যায়নও করেন তিনি।

এরপর ড. চক্রবর্তী বিভিন্ন প্রকারের কলমের চারা তৈরির প্রশিক্ষণ দেন চারাকুশলী শঙ্কর দত্তকে সাথে নিয়ে। গুটিকলম, জোরকলম, কাটাকলম – কীভাবে দিতে হয় তা তিনি হাতে কলমে শেখান। ড. মিশ্র আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে কীভাবে ফলচাষ করা যায় এবং তার ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি ও ফলের গুণ মাণ কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় – সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে ভালো ফলন পাওয়া যায় এবং রোগপোকার আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করা যায় তা বলেন অধ্যাপক মিশ্র। যেহেতু ফল আমরা কাঁচা খাই, তার জন্য ফলে বিষপ্রয়োগ কতটা কম করে ফসল রক্ষা করা যায় সেটা নজর রাখতে হবে। বিশেষ ক’রে জৈব পদ্ধতি অবলম্বন করে রোগপোকাকে কীভাবে গাছ থেকে দূর করা যায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।

See also  পূর্ব বর্ধমান জেলার ৫ পুরসভায় নতুন প্রশাসক বোর্ড বসল

ফল চাষ করে কৃষকদের আয় বাড়ানোর উপর জোর দেন অধ্যাপক কল্যাণ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রায় আশি হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি করতে হয়। ফল চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী যেমন হওয়া যাবে, পাশাপাশি আমাদের দেশ আত্মনির্ভরশীল হবে। যেখানে শীতকালীন সব্জি ও অন্যান্য সব ফসল চাষেই কৃষকদের লস হচ্ছে সেখানে ফল চাষ করলে লাভের মুখ দেখতে পারবেন কৃষকরা ব’লে আমি মনে করি। ফলসা, গোলাপজাম, চেড়ী, আতা, কাঠ লিচু, কেন্দু, গাব, পিয়াল, কদবেল, কামরাঙা, সবেদা ইত্যাদি গৌণ ফলের চাহিদা আছে বাজারে। সে গুলো চাষেও এগিয়ে আসা উচিত আধুনিক চাষিদের। পাশাপাশি ঔষধি ফল – আমলকী, হরিতকী, বহেরা চাষ নিয়েও চাষিরা উৎসাহ দেখান।

বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খামারে নিয়ে গিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফলচাষ করা দেখানো হয় চাষিদের। আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, কলা – এই পাঁচটি মুখ্যফল চাষ নিয়েও আলোচনা করা হয়। ড্রাগন ফল ও এভোগাডো চাষ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।এক দিনের এই শিবির সম্পর্কে অধ্যাপক দিলীপ কুমার মিশ্র বলেন, একজন মানুষের প্রতিদিন ১৩০ গ্রাম ফল শরীর সুস্থ রাখার জন্য খাওয়া উচিত। মরশুমি ফল খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায়।

যেহেতু বাজারে বিভিন্ন প্রকারের ফলের চাহিদা রয়েছে তাই চাষিদের প্রথাগত চাষাবাদ ছেড়ে ফল চাষে এগিয়ে আসা উচিত। যুব সমাজ ফলচাষ ও অন্যান্য ফসল চাষে এগিয়ে এলে সমন্বিত ব্যবস্থায় কৃষি ও কৃষকদের উন্নতি হবে এবং দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। এই শিবিরে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন ‘কৃষক মিত্র’ মিলন খামারিয়া। তিনি কৃষকদের ফল চাষে উৎসাহিত করেন। অন্নদাতা কৃষকদের গর্বের সাথে কৃষিকাজ করার জন্য বলেন। প্রশিক্ষণ শেষে সবাইকে কিটস ব্যাগ, জৈব সার ও শংসাপত্র প্রদান করা হয়।

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---