ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে পঞ্চায়েতের সদস্য হয়েছিলেন টুম্পা মালিক। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের চকদীঘি পঞ্চায়েতের মনিরামবাটি ইলামবাজার এলাকার ২২ নম্বর সংসদের ১৮৫ নম্বর বুথের সদস্যা ছিলেন টুম্পা। পাঁচ বছর ঘুরতেই পাল্টে গেল ছবি। টুম্পা মালিক এবার ঘাস ফুল শিবির পাল্টে ওই একই বুথ থেকে কাস্তে-হাতুড়ি-তারা নিয়ে ভোটে লড়বে।
শুধু লড়বেনই না, একশ শতাংশ নিশ্চিত ভোটে জিতবেন তিনি। তৃণমূল এবার আর টিকিট দেয়নি টুম্পা কে। ফলে গ্রামের মানুষই টুম্পাকে তাদের কাছের, কাজের মানুষ হিসেবে ভোটে দাঁড়ানোর জন্য মনোনীত করেছেন। তাই গ্রামের উন্নয়নের অসম্পূর্ণ কাজ কে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে তৃণমূলের ঝান্ডা ছেড়ে এবার সারা ভারত কিষান সভার পতাকা তুলে নিয়েছেন টুম্পা মালিক।
অন্যদিকে, এতদিন সিপিএমের নেতা হিসেবে পরিচিত তথা ২০১৩ ও ১৮- র নির্বাচনে এলাকায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে পরিচিত আজাদ রহমান কে এবার দল তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে ওই একই বুথ থেকে প্রার্থী করেছে। অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এবার টিকিট পাননি টুম্পা। গ্রামের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় সিপিএমের তরফে তাঁকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
টুম্পা জানিয়েছেন, ‘ আমরা ছোট থেকেই তৃণমূল করি। সদস্যাও ছিলাম। এবারে আমায় মনোনয়ন দেয়নি। গ্রামের উন্নয়ন করেছি বলে গ্রামবাসীদের দাবিতে দল ছেড়ে লাল ঝান্ডা ধরেছি। জিতবই, এব্যাপারে একশো শতাংশ বিশ্বাস রাখি।’ ইতিমধ্যেই টুম্পাকে জেতাতে ময়দানে নেমে পড়েছে জামালপুর এলাকার সিপিএমের কর্মীরা। বাড়ি বাড়ি প্রচার থেকে শুরু করে দলের পতাকা, ফ্লেক্স লাগানোর কাজ চলছে মনিরামবাটি গ্রাম জুড়ে। যদিও আজাদ রহমান তার জেতার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই বলেই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন।
স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের এইভাবে দল ছেড়ে সিপিআইএমের হয়ে ভোটে লড়াই করার ঘটনায় জোর আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে গোটা জামালপুর তথা জেলা জুড়ে। টুম্পার স্বামী তাপস মালিক বলেন, ‘ দল আমাদের কিছুই জানায়নি। এমনকি নবজোয়ার কর্মসূচিতেও তাদের ডাকা হয়নি। আমরা কিছুই জানতে পারিনি। অন্য গ্রাম থেকে নিয়ে এসে আজাদ রহমান কে প্রার্থী করেছে দল। উনি আগে সিপিএমের নেতা ছিলেন। তাই আমরা ক্ষুব্ধ।’
সিপিএমের জামালপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুকুমার মিত্র বলেন, ‘ এতে দোষের কিছু নেই। আমাদের দল ভেঙেই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল। এখন আবার উলটো স্রোত শুরু হয়েছে। কাজ না হওয়ায়, সম্মান না পেয়ে মানুষ ফিরে আসছেন। এরা আসলে আমাদের দলেরই লোক ছিলেন। আবার দেরিতে হলেও বোধোদয় হচ্ছে।’ বিজেপি অবশ্য তৃণমূল, সিপিআইএমের মধ্যে সেটিং তত্ত্বই এই ঘটনার ফল বলে উল্লেখ করেছে।