বর্ধমানে চোখে লঙ্কার গুড়ো ছিটিয়ে ব্যবসায়ীর লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার ৬মাস পর গ্রেফতার বিজেপির সক্রিয় দুই কর্মী, আলোড়ন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: চোখে লঙ্কার গুড়ো ছিটিয়ে এক গুড় ব্যবসায়ীর ব্যাগে থাকা ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ও দেড় ভরি ওজনের গলার সোনার চেন ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় প্রায় মাস ছয়েক আগে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জ এলাকায়। ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে বর্ধমান থানার পুলিশ সেই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছিল না। তবে তদন্ত চলছিলই। শেষমেশ বৃহস্পতিবার বিকেলে খোসবাগান এলাকার রানীসায়ের পশ্চিমপাড় থেকে পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত একটি বাইক সমেত দু জনকে গ্রেপ্তার করে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শান্তনু চট্টোপাধ্যায় ওরফে ঝাকু ও টোটন ভকত। ঝাকুর বাড়ি বর্ধমান থানার গোদা বেনেপুকুর পাড় এলাকায় অন্যদিকে টোটন লাকুর্ডির বিটি কলেজ চন্ডীতলা এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক জিঞ্জসাবাদে ধৃতরা তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি চুরির ঘটনায় ধৃতদের সঙ্গে মুন্না সাউ ও কাপিস দাস নামে আরো দুজন ছিল বলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা জানিয়েছে। শুক্রবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ। চুরি যাওয়া টাকা ও সোনার চেন উদ্ধারের জন্য এই ঘটনায় আরো যারা জড়িত ছিল তাদের গ্রেপ্তার করতে ধৃত দুই দুষ্কৃতি কে পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত ধৃতদের সাতদিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ জুন সন্ধ্যায় আলমগঞ্জ এলাকার এক গুড় ব্যবসায়ী, নাম মনোজিৎ দে তার দোকান বন্ধ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে ব্যাগে টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে রওনা দেন। মুন্না সাউ ফোন করে কাপিস দাস কে সেই কথা জানিয়ে দেয়। এরপরেই কাপিস, ঝাকু ও টোটন একটি বাইক নিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়ির অদূরেই অপেক্ষা করছিল। মনোজিৎ বাড়ির কাছে আসতেই চোখে লঙ্কার গুড়ো ছিটিয়ে ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পরই গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে বর্ধমান থানার আইসি নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার বিষয় খতিয়ে দেখেন। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী মনোজিৎ বাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘটনার প্রায় ৬মাস পর অবশেষে বর্ধমান থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার দুজনকে গ্রেপ্তার করলো। 

এদিকে এই চুরির ঘটনায় ধৃত ও পলাতক চারজনই বিজেপির ঘনিষ্ঠ ও সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করেছে তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপি পার্টির সক্রিয় কর্মীরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার হবার পরই জেলা সভাপতি নাকি মুখ লুকোতে ব্যস্ত। এমনকি সংবাদ মাধ্যমের সামনেও আসতে নাকি তিনি লজ্জা পাচ্ছেন। এটাই বিজেপি দলের কর্মীদের চরিত্র।’ অন্যদিকে বিজেপি থেকে সদ্য তৃণমূলে আসা শ্যামল রায় বলেন, ‘বর্ধমান জেলা বিজেপির এটাই আসল চরিত্র। চোর, ছিনতাইবাজ, দুশ্চরিত্র লোকেদের  সঙ্গে নিয়েই বিজেপির জেলা সভাপতি দল চালাতে অভ্যস্ত। বর্ধমানে বিজেপি দলটার অস্তিত্ব বলে আর কিছুই নেই। এইসবের প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই ওদের গাত্রদাহ হয়েছিল। যাইহোক, ভালো সময়েই দলটা ছেড়ে এসেছি।’ অন্যদিকে বিজেপির জেলার মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ’ যে কেউ বিজেপি করতে পারে। তাবলে কেউ যদি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে আইন আইনের পথে চলবে। তবে তৃণমূলের মুখে এইসব মানায় না, ওদের তো ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে।’

আরো পড়ুন