ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসি: প্ৰাতঃভ্রমণে বেরিয়ে বেপরোয়া বালির ট্রাক্টরের ধাক্কায় বেঘোরে মৃত্যু হলো এক গ্রামবাসীর। মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গলসি থানার অন্তর্গত ভুঁড়ি পঞ্চায়েতের ডালিমগড়িয়া এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম মুক্তরাম রানা ওরফে সন্তু রানা (৬৭)। বাড়ি ডালিমগড়িয়া গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল প্রায় ৬ টা নাগাদ গ্রামের রাস্তাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই ঘাতক ট্রাক্টরের চালক গাড়িটিকে রাস্তার পাশে জমিতে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জখম ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘাতক ট্রাক্টরের চালক ও মালিকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দামোদর নদ জুড়ে তাহেরপুর, জুজুটি, দাদপুর, গোহগ্রাম সহ গলসির বিস্তীর্ণ এলাকায় একাধিক বেআইনি বালি ঘাট চালাচ্ছে কিছু বালি মাফিয়া। এই সমস্ত বালি ঘাটের কোনো বৈধ অনুমতিই নেই। এরপরেও প্রতিদিন নদী থেকে বালি চুরি করে দিনরাত পাচার করে চলেছে বেশ কিছু বালি মাফিয়া। জেলা বা ব্লক ভূমি রাজস্ব দপ্তরের নাকের ডগায় লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারি রাজস্ব লুট হয়ে চললেও অদৃশ্য কারণে আধিকারিকদের নজরে আসেনা এইসব দুর্নীতি। ফলে অবৈধ বালি কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে দিনদিন।
কতো তাড়াতাড়ি নদী থেকে বালি নিয়ে খালি করে ফের লোড করা যাবে, তার প্রতিযোগিতা চলছে সারাক্ষণ। একটি ট্রাক্টর দিনে ৫ থেকে ৬ বার গ্রামের রাস্তা দিয়ে পরি কি মরি করে ছুটছে বালি লোড করার জন্য। কে মরলো, এদের তাতে কিছু যায় আসে না! পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে যে ট্রাক্টরটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে তার মালিকের বাড়ি ভাতার থানার মাহাচন্দা এলাকায়। আর ট্রাক্টর খাটছে গলসি এলাকায়। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ, প্রশাসন এমনকি শাসক দলের নেতারাও এই বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম বন্ধ করতে পারছে না। স্বাভাবিকভাবেই চরম আতঙ্কে মধ্যে থাকতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী বেপরোয়া বালির ট্রাক্টরের দাপটে কার্যত জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠছে এলাকার সমস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের।