কান্নার আওয়াজ শুনে রাস্তা থেকে কাকে নিয়ে এসেছিলেন ঘরে! জেনে তাজ্জব হবেন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: ঘর থেকে অন্যের খামারের খড়ের পালুইয়ের নিচে কদিন ধরেই মিউ মিউ আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলেন আলোলিকা। এই শীতের রাতে একরত্তি বিড়াল ছানার কান্নার আওয়াজ শুনে কষ্ট হচ্ছিল তার। তিনি ঠিক করলেন ছানা টাকে বাড়িতে নিয়ে আসবেন। বাড়িতে পোষ্য খরগোশ, মা হারা তিনটে কুকুর ছানার সঙ্গে ওটাও থাকবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছানাটাকে তুলে নিয়ে এসেছিলেন বাড়িতে। প্রায় দিন পনেরো ধরে তিনবার করে দুধ খাইয়ে, যত্ন নিয়ে ছোট্ট ছানা টাকে বড় করছিলেন আলোলিকা।

বিজ্ঞাপন

আলোলিকা ঘোষের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার ইলামপুর গ্রামে। ধনিয়াখালির একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষাকতা করেন তিনি। তাঁর কথায় ‘ ঠিক বাড়িতে পুষবো ভেবে কোনো প্রাণীকে নিয়ে আসিনি। তবে কোন প্রাণীর অসহায় অবস্থা দেখে থাকতে পারি না আমি। আর এইভাবেই মা মরা তিনটে কুকুর ছানা কে রাস্তা থেকে নিয়ে এসে বড় করছি বাড়িতে রেখেই। আর এবার একটি বিড়াল ছানা। কিন্তু সমস্যার শুরু দিন তিনেক আগে থেকে। বিড়াল ছানা টা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে জড়োসড়ো হয়ে থাকছিল। এমনকি রাতে আমার ভাই, মা ওর গা গরম রাখার জন্য বিছানার মধ্যে নিয়ে শুচ্ছিল। এরপর ডাক্তার দেখানোর জন্য পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বিড়াল ছানা টার ছবি তুলে পাঠাই ডাক্তার বাবুকে।’

আর এরপরই ঝোলা থেকে বেরিয়ে পড়ে আসল বিড়াল। ডাক্তার বাবু ছবি দেখে জানান, এটা বিড়ালের ছানা নয়, কটাস (cevet cat) এর বাচ্চা। আলোলিকা বলেন,’ এরপর আর দেরি করিনি, আমার পরিচিত এক দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করে কটাস ছানা টিকে নিয়ে গিয়ে সরাসরি বর্ধমান রমনাবাগানে বন দপ্তরের হাতে তুলে দিই। এরপর ওনারাই সেটি কে চিকিৎসা করে সুস্থ করবেন বলে জানিয়েছেন।’

আলোলিকা বলেন,’ ১৫দিন ধরে খুব যত্ন নিয়ে এই ছানা টিকে বড় করছিলাম। হুবহু বিড়ালের মতো দেখতে বলে প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি। তবে ওর গায়ের রং টা বিড়ালদের খুব একটা দেখা যায়না। এখন বিষয়টা জানতে পেরে একটু খারাপ লাগছে। তবে কটাস ছানা টা ভালভাবে থাকুক, বড় হোক এটাই ঠিক। শুনেছি এরা বিড়ালের প্রজাতির। দেখতেও বিড়ালের মতোই। তবে এরা বন্যপ্রাণী। এদের পোষা যায়না। এরা বন, জঙ্গলে থাকে। শান্ত প্রকৃতির হয়। যদিও গ্রামের অনেকের কাছে শুনেছি, তাদের অনেকের বাড়ির হাঁস, মুরগির ছানা ধরে নিয়ে পালায় কটাসে। তাই ছোট অবস্থায় জানতে পেরেছি তাতে ভালই হয়েছে। বন দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, জামালপুরের বাসিন্দা এক মহিলা একটি সিভেট ক্যাট এদিন বন দপ্তরের কাছে দিয়ে গেছেন। তিনি বুঝতে না পেরে সেটিকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে জানতে পেরে এখানে দপ্তরে দিয়ে যান। প্রাণীটির প্রাথমিক চিকিৎসা করে ফের প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

আরো পড়ুন