ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বর্ধমানের মহরম ও দুর্গাপুজোর মা এর কার্নিভালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হল শুক্রবার। এই দুই উৎসবের বিজয়ীদের নাম নিয়ে শহর জুড়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছিল আগে থেকেই। অবশেষে এদিন বর্ধমানের সংস্কৃতি প্রেক্ষাগৃহে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেনের উপস্থিতিতে মহরম ও কার্নিভালের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এদিন বিজয়ী তিনটি মহরম কমিটির সদস্যরা এবং মা এর কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী ৩০টি দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন।
উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা, বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার, বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপার্সন কাকলী তা, জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক তথা এদিনের অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা খোকন দাস সহ পুরসভার অন্যান্য কাউন্সিলার বৃন্দ ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রনীল সেন ও তাঁর সহযোগী তিন উদীয়মান শিল্পী চন্দ্রিকা, অরিত্র ও অরিজিৎ -এর পুরনো দিনের বাংলা গান উপস্থিত দর্শকদের মন জয় করে নেয়। অনুষ্ঠানের পরবর্তী অংশে শহরে মহরমের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী কমিটিগুলোর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারিকে পুরস্কৃত করা হয়। শহরের মেহেদীবাগান মহরম কমিটি এবছর প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তাদের হাতে ২লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে। দ্বিতীয় হয়েছে খাগড়াগড় মহরম কমিটি। তারা এক লক্ষ টাকার চেক পেয়েছে। তৃতীয় হয়েছে ভেরিখানা মহরম কমিটি। তাদের হাতে ৫০হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
এই অনুষ্ঠান শেষে ফের ইন্দ্রনীল সেনের গানের সঙ্গীতানুষ্ঠান চলার পর কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী দুর্গাপুজো কমিটিগুলোর হাতে একে একে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বর্ধমানে প্রথমবার কলকাতার আদলে কার্নিভালের আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। এবার কার্নিভালের শোভাযাত্রার নিরিখে প্রথম স্থান পেয়েছে যুগ্মভাবে সবুজ সংঘ ও কাঞ্চননগর দুর্গাপুজো সমন্বয় সমিতি। এরা প্রত্যেকেই পাঁচ লক্ষ টাকার পুরস্কার মূল্য জিতে নিয়েছে।
যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে ন্যাচারাল সিটি দুর্গাপুজো কমিটি ও ২নং শাঁখারীপুকুর সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। এরা প্রত্যেকেই পুরস্কার মূল্য আড়াই লক্ষ টাকা করে পেয়েছে। যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলমগঞ্জ বারোয়ারী ও রথতলা দুর্গাপুজো সমন্বয় সমিতি। এদের হাতে দেড় লক্ষ টাকা করে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ স্থানে যুগ্মভাবে জায়গা করে নিয়েছে লাল্টু স্মৃতি সংঘ ও বহিলাপাড়া অদ্বিতীয়া মহিলা কল্যাণ সমিতি। এদের দুটি কমিটির হাতেই পুরস্কার মূল্য হিসেবে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
কার্নিভালে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে শহরের চারটি পুজো কমিটি। এদের প্রত্যেকের হাতে ৫০হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। পুজো কমিটি গুলো হল বুড়ির বাগান সর্বজনীন, সদরঘাট কালিতলা বারোয়ারী দুর্গাপুজো কমিটি, খালুইবিল মাঠ গুডশেড রোড সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি ও ইছলা বাদ পদ্মশ্রী সংঘ। ষষ্ঠ স্থানেও চারটি পুজো কমিটি জায়গা করে নিয়েছে। তারা হল চৌরঙ্গী ক্লাব, মাতৃ সংঘ, আমরা সবাই মহিলা সমিতি ও কেশবগঞ্জ বারোয়ারী। প্রত্যেককে ২৫হাজার টাকা করে পুরস্কার মূল্য তুলে দেয় বিশিষ্ট অতিথিরা। এছাড়াও ১৪টি পুজো কমিটি কে ২০হাজার টাকা করে প্রত্যেক কে পুরস্কৃত করা হয়েছে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে।