কেন্দ্রীয় জু অথরিটির প্রশংসা পেলো বর্ধমানের রমনাবাগান মিনি জু, দর্শকদের জন্য তৈরি হচ্ছে ফুড কোর্ট

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন

সৌরীশ দে,বর্ধমান: বর্ধমানের রমনাবাগান মিনি জু পরিদর্শনে এসে এখানকার পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে গেলেন সেট্রাল জু অথরিটির সদস্য আর কে সিং(আইএফএস)। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ এক সদস্যের সেন্ট্রাল জু অথরিটির প্রতিনিধি এসে পৌঁছান বর্ধমান রমনাবাগান জুলজিক্যাল পার্কে। এদিন তিনি মিনি জু ঘুরে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বনবিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী, অ্যাটাচ ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মাসুদ সহ বনবিভাগের অন্যান্য অফিসার ও কর্মীরা। 

আর কে সিং বলেন, “এই রাজ্যের তিনটি জুলজিক্যাল পার্ক ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করেছি। তারই মধ্যে বর্ধমান রমনাবাগান মিনি জু এর পরিকাঠামো সব থেকে ভাল লেগেছে। এখানকার পশু পক্ষিদের থাকার ও খাওয়ার জন্য ব্যবস্থা খুব উন্নতমানের। এলাকার পরিধিও যথেষ্ট বড়। কেন্দ্রের গাইড লাইন অনুযায়ী খাবারের মান, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও কর্তৃপক্ষ ভাল কাজ করছে।” তিনি বলেন, ” আরো বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এই পার্কে নিয়ে আসলে এই মিনি জুয়ের আকর্ষণ সাধারণ মানুষের কাছে বাড়বে। একই সাথে বাড়বে আয়। পাশাপাশি দর্শকদের বিশ্রাম নেওয়ার ও খাওয়ার জন্য পার্কের ভিতরে ব্যবস্থা রাখতে হবে। পশু পক্ষীদের সম্পর্কে সাধারণ দর্শকদের আরো বিস্তারিত জানিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধ করে তুলতে উদ্যোগ নিতে হবে।”

বিভাগীয় বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন,” এদিন সেন্ট্রাল জু অথরিটির পক্ষ থেকে এক সদস্যের প্রতিনিধি রমনাবাগান মিনি জু পরিদর্শনে এসেছিলেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর প্রায় ২টো পর্যন্ত ছিলেন। তিনি গোটা এলাকা ঘুরে দেখেছেন। সামগ্রিক ভাবে তিনি প্রশংসা করেছেন এই মিনি জু-য়ের। আগামীদিনের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি।” তিনি বলেন, ” দেশের সমস্ত চিড়িয়াখনার মান, পশুদের খাদ্য তালিকা থেকে পরিচর্যা এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলি সেন্ট্রাল জু অথরিটির দেখাশোনা করে। তাদের গাইড লাইন প্রত্যেক জু অথরিটি কে মেনে চলতে হয়। আর সেই সমস্ত নির্দেশিকা নিয়মানুযায়ী পালন করা হচ্ছে কিনা। প্রাণীদের সঠিকভাবে পরিচর্যা, প্রতিপালন হচ্ছে কিনা দেখার জন্য কেন্দ্রীয় জু অথরিটি তাদের প্রতিনিধিদের পরিদর্শনের জন্য পাঠায়। সব কিছু খতিয়ে দেখে এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি আর কে সিং প্রশংসা করেছেন বর্ধমান রমনা বাগান কর্তৃপক্ষের। 

নিশা গোস্বামী বলেন,” কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি এদিন তাদের বলেছেন নতুন কিছু প্রাণী এখানে নিয়ে আসার জন্য। যদিও ইতিমধ্যেই বনবিভাগের পক্ষ থেকে রমনা বাগান অভয়ারণ্যের আকর্ষণ বাড়াতে একাধিক প্রজাতির প্রাণী নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সম্বর ডিয়ার, বেঙ্গল ফক্স, হায়না, লেপার্ড ক্যাট, ইন্ডিয়ান উলফ (নেকড়ে), তিনটি মিষ্টি জলের কুমির সহ বেশ কিছু ফ্লাইং বার্ড ও ওয়াটার (জলজ) বার্ড। তিনি বলেন, নতুন পশু পাখিদের জন্য ইতিমধ্যেই এনক্লোজার তৈরি করা হয়েছে। পশু পাখি পাওয়ার জন্য রমনাবাগান মিনি জু এর জন্য পক্ষ থেকে রাজ্যে প্রস্তাব পাঠানো আছে। অনুমোদন হলেই এই সমস্ত প্রাণীদের নিয়ে আসা হবে। 

তিনি বলেন,” রমনা বাগানের আকর্ষণ বাড়াতে ইতিমধ্যেই দর্শকদের বিশ্রাম নেওয়ার এবং খাওয়া দাওয়া করার জন্য ফুড কোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে ছোটদের নিয়ে এই স্থান ভ্রমণের জন্য আসা দর্শনার্থীদের সুযোগ সুবিধার কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাঘ, ভল্লুক, হরিণ, ময়ূর, কুমির দেখতে দেখতেই এবার খাওয়া দাওয়া থেকে বিশ্রাম নিতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এরই পাশাপাশি বর্ধমান শহরের ইতিহাস, বন্যপ্রাণ ও পরিবেশ এবং পশু পক্ষীদর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত প্রকৃতি বিক্ষণ কেন্দ্র কে আরো উন্নত করা হচ্ছে। 

আরো পড়ুন