ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ২৪ জানুয়ারি থেকে চালু হয়েছে নতুন পরিবহনের আইন। নতুন ট্রাফিক আইন না মানলেই আগের থেকে কমপক্ষে দশ গুণ বেশি গাঁটের কড়ি গুনতে হচ্ছে নিয়মভঙ্গকারীকে। প্রায় প্রতিদিনই ট্রাফিক নিয়ম ভাঙার দায়ে জরিমানার কবলে পড়তে হচ্ছে শহরাঞ্চলের দু’চাকা ও চারচাকা গারির শতাধিক মালিকদের। তবুও হুঁশ ফিরছে না এক শ্রেণীর মানুষের। এমনকি ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রচার চালানোর পাশাপাশি নিয়মভঙ্গকারী বহু গাড়ি চালককে প্রথম দিকে কেবল সতর্ক করেই ছেড়ে দিয়েছিল পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু এরপরেও অনেকেই এখনো হেলমেট না পড়েই, কিংবা কানে মোবাইল কিংবা হেড ফোন লাগিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন। সিট বেল্ট না লাগিয়েই চার চাকা নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছেন। অনেক ক্ষেত্রেই গাড়ির কাগজপত্রও আপ টু ডেট থাকছে না বলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের কর্তা দের অভিযোগ। আর এতদিন মানুষকে সতর্ক সচেতন করার পর এবার রীতিমত রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যাতায়াতকারী নিয়মভঙ্গকারী দের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ শুরু করলো পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ।
শুক্রবার পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোটা জেলা জুড়ে চললো স্পেশাল ড্রাইভ। আগামীদিনে এই অভিযান জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। তিনি জানিয়েছেন, মোটর সাইকেল কিংবা স্কুটি যাইহোক, রাস্তায় বেরোলে মাথায় হেলমেট থাকতেই হবে। নতুন ট্রাফিক আইন সম্মন্ধে সচেতন হতে হবে। একই ভুল বারবার বরদাস্ত করা হবে না। গাড়ির পেপার্স ঠিকঠাক রাখতে হবে গাড়ির মালিককে। নিয়ম ভাঙলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর এদিনের স্পেশাল ট্রাফিক ড্রাইভে কমবেশী হাজারেরও বেশী বাইক সহ অনান্য গাড়িকে ট্রাফিক আইন না মানায় জরিমানা করা হয়েছে। তবে এদিন জেলা জুড়ে অভিযানে পুলিশ কত টাকা জরিমানা বাবদ আদায় করেছে সে বিষয়ে পুলিশ সুপার জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘এদিন জরিমানা যা আদায় হয়েছে, সেটির হিসেব আমরা পরেরদিন পাই। তাই আজই কত হয়েছে বলা সম্ভব নয়।’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘জেলা জুড়ে এই অভিযান করা হয়েছে একেবারে অতর্কিতেই। এই অভিযান আরও জোরদার করা হবে। বাইক চালালে মাথায় হেলমেট পড়তেই হবে। বহুবার ধরা হয়েছে, বোঝানো হয়েছে কিন্তু একটা অংশের লোক কথা শুনছেন না। ফলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই হবে আমাদের। পাশাপাশি অনান্য গাড়িও এদিন চেকিং করা হয়।’
উল্লেখ্য নতুন নিয়মে হেলমেট না পড়লে, দু’জনের বেশী চাপলে বা চারচাকায় সিটবেল্ট না লাগালে এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে দিতে হবে পাঁচ হাজার টাকা। স্পিড লিমিট না মানলে ১ থেকে ২ হাজার টাকা অবধি জরিমানা দিতে হবে। বিপজ্জনক ভাবে বা অত্যাধিক গতিতে গাড়ি চালালে জরিমানা পাঁচ হাজার টাকা, এয়ার হর্ণ বা বৈধ ধোঁয়া পরীক্ষার কাগজ না থাকলে জরিমানা ১০ হাজার টাকা। বিনা নম্বরে বা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি চালালে ৫ হাজার টাকা, গাড়ি ইন্সুরেন্সের অধীনে না থাকলে ২ হাজার টাকা। অ্যাম্বুল্যান্স, দমকল বা এই জাতীয় কোন জরুরি গাড়িকে যাবার জায়গা না দিলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।