জেলা ভূমি দপ্তরের অভিনব উদ্যোগ, দালালরাজ বন্ধে এবার কন্যাশ্রীদের প্রশিক্ষণ শুরু

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: জমি সংক্রান্ত নানান কাজের তথ্য সঠিকভাবে জানা না থাকার সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে এতদিন একশ্রেণীর অসাধু চক্র টাকা পয়সার বিনিময়ে ঠকিয়ে আসছিল সাধারণ মানুষকে। এবার পূর্ব বর্ধমান জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের উদ্যোগে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করা হল এই দালাল চক্রের হাত থেকে উপভোক্তাদের রক্ষা করার। আর এই কাজে পারদর্শী করে তুলতে কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করল দপ্তর। বৃহস্পতিবার জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরে স্থানীয় একটি স্কুলের ত্রিশ জন কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের এনে হাতে কলমে কাজ করে দেখালেন অতিরিক্ত জেলাশাসক ও জেলা ভূমি রাজস্ব আধিকারিক ইউনিস রিসিন ইসমাইল। 

বিজ্ঞাপন

কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যরাও মন দিয়ে দেখলেন ভূমি দপ্তরের নানা কাজ। জানলেন নানা তথ্য। একই সঙ্গে তারাও এক গুচ্ছ প্রশ্ন করলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের। অতিরিক্ত জেলাশাসক ইউনিস রিসিন ইসমাইল বলেন, ‘জমির রেকর্ড ঠিক করে দেবার নামে এক অসাধু চক্র কাজ করছে। যে কাজ খুব সহজে, একেবারে বিনা খরচে আমরা করে দিতে পারি, সেই কাজের জন্যও টাকা নিচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু লোক। ইতিমধ্যে আমরা হেল্প ডেস্ক চালু করেছি। এবার আমরা এই চক্রটিকে ভাঙতেই কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের অফিসে এনে নানা বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেবার ব্যবস্থা করেছি। এখন প্রায় সবার হাতেই স্মার্ট ফোন। সেখান থেকেই তারা দেখে দিতে পারবে জমি সংক্রান্ত নানান কাজের পদ্ধতিগত বিষয়গুলি। বাড়িতে বসেই, বা গ্রামে, পাড়ার কেউ অসুবিধায় পড়লে এই কন্যাশ্রী মেয়েরাই তাঁদের সমস্যার সুরাহা করে দিতে পারবে সহজে। এতে অনেকেরই জমি সংক্রান্ত বিষয় জানতে এসে প্রতারণার শিকার হবেন না। অনর্থক টাকাও খরচ হবে না।’

ভূমি দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এই প্রক্রিয়া এখন থেকে ধারাবাহিক ভাবে চলবে। এদিন কন্যাশ্রী পড়ুয়াদের জমির মিউটেশন করানোর ক্ষেত্রে কি কি নিয়ম কানুন আছে সে বিষয়ে যেমন অবগত করানো হয়, পাশাপাশি জমির কি অবস্থান সেটি বাস্তু জমি, না শালি জমি, পুকুর নামে রেকর্ড আছে কিনা প্রভৃতি বিষয়েও জানানো হয়।এরই পাশাপাশি কোন জমি কেনার আগে সেই জমির পর্চা দেখে কিভাবে সেই জমির অবস্থান দেখে নেওয়া যায় সেই বিষয়েও সহজ সরল ভাবে মেয়েদের বোঝান দপ্তরের আধিকারিকগণ। 

কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে আসা শিক্ষিকা সুনীতা সাহা বলেন, ‘এই কন্যাশ্রীর মেয়েরাইতো আগামীদিনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। এরাই একদিন নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে তাদের প্রতিবেশী, আত্মীয়দের সঠিক তথ্য বুঝিয়ে অহেতুক হয়রানির হাত থেকে রক্ষা করবে। বাড়ির লোকেদেরও অকারণে হয়রানি হতে হবেনা। প্রতিবেশীদেরও সাহায্য করতে পারবে।’ এদিন এই বিশেষ কর্মশালায় উপস্থিত দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী শ্যামলী মন্ডল, একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী মৌসুমী রক্ষিত বলেন, ‘ এটা নতুন অভিজ্ঞতা। আমাদের খুব ভালো লেগেছে।  আজই বাড়িতে গিয়ে বাবার কাছ থেকে জমির দলিল দেখে আমাদের জমির অবস্থান দেখব। পাড়ার কেউ অসুবিধায় পড়লে তাঁকেও এবার সাহায্যও করতে পারবো। শুধু শুধু কাউকে প্রতারকের খপ্পরে পড়তে দেবো না।’

আরো পড়ুন