পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্তের ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও সুস্থতার পারদও উর্ধমুখী

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: একদিকে যখন প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। সেইসময় করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুস্থতার হারও উর্ধমুখী। সুস্থ হওয়ার নিরিখে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই সাফল্য কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রেখেছে জেলা প্রশাসন তথা স্বাস্থ্য দপ্তরকে।

শনিবার রাত পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০জনের। শনিবারও জেলায় কয়েকজনের মৃত্যুর সংবাদ এলেও তাঁরা যে করোনাতেই আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তেমন কোনো নিশ্চয়তা মেলেনি সরকারীভাবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে শুক্রবার পর্যন্ত গোটা জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩৮জন। শনিবার এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮২ জন। এদিন নতুন করে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯জন। যার মধ্যে খোদ বর্ধমান পুরএলাকায় 
রয়েছেন ১০জন।
স্বাভাবিকভাবেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় কন্টেনমেন জোনের সংখ্যাও বাড়ছে। শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় মোট কন্টেনমেন জোনের সংখ্যা ছিল ১৭৬টি। শনিবার সেই সংখ্যা হয়েছে ১৭৭টি। যদিও গোটা জেলায় ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে যাওয়ায় ১৭৭টি কন্টেনমেন জোনকে তুলেও নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এখনও গোটা জেলায় ৩৮ হাজার ৮২ জনের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২৯২ জনের। এর মধ্যে ৫৮২জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। 
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, যে ৫৮২জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তা প্রথম দফার পরীক্ষা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কোভিড -এর নতুন নিয়ম অনুসারে কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে অর্থাৎ প্রথম টেষ্টে তাঁর পজিটিভ আসার পর ৭দিনের মাথায় ফের দ্বিতীয়বার তাঁর টেষ্ট করানো হচ্ছে। দ্বিতীয় দফার সেই টেষ্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তার মধ্যে মাত্র ৬জনকে পাওয়া গেছে যাঁদের দ্বিতীয় দফার রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। যা জেলা প্রশাসনের কাছে অনেকটাই স্বস্তির কারণ। 
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই প্রথম এই ধরণের একটি কেস পাওয়া যায়। যাঁর দ্বিতীয় দফার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ১৪ জুলাইয়ের পর ১৬ জুলাই এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩-এ। ২০ জুলাই তা হয় ৪ এবং ২২ জুলাই তা দাঁড়িয়েছে ৬। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সপ্তম দিনে কারও রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর নবম দিনে ফের তাঁর রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে তাহলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি জানিয়েছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন সেই ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপরই তিনি সুস্থ হচ্ছেন দ্রুত। 
একইসঙ্গে এখনও পর্যন্ত যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ছিলেন। যেহেতু কোভিড নিয়ম অনুসারে তাঁদের প্রত্যেকেরই সোয়াব টেষ্ট করা আবশ্যক এবং সেক্ষেত্রে পজিটিভ রিপোর্ট আসলে করোনায় মৃত্যু বলে জানানো বাধ্যতামূলক, তাই কোভিড মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সুস্থতার হার যথেষ্টই আশাব্যঞ্জক। শনিবার পর্যন্ত ২৮৫জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অপরদিকে, বর্ধমান শহরে এদিনও কড়াভাবেই লকডাউন পালিত হয়েছে। জায়গায় জায়গায় পুলিশী নজরদারীও ছিল চোখে পড়ার মত। 

আরো পড়ুন