বর্ধমানে লকডাউন উঠতেই রাস্তায় মানুষের ঢল, ফের সংক্রমণ বৃদ্ধির আশংকা, ৫আগস্ট থেকে খুলছে জিম

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: শেষমেষ আগস্ট মাসের ৫তারিখ থেকে রাজ্যে জুড়ে খুলে যাচ্ছে যোগা প্রতিষ্ঠান এবং জিমন্যাসিয়াম। যদিও ওইদিনই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আগস্ট মাসে প্রথম সম্পুর্ন লকডাউন ঘোষণা করা আছে। এদিকে হু হু করে বাড়তে থাকা সংক্রমণে রাশ টানতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের টানা সাতদিনের বর্ধমান শহর লকডাউনের মেয়াদ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। বুধবার ছিল রাজ্য জুড়ে লকডাউন। স্বাভাবিকভাবেই টানা কিছুদিন মানুষ ঘরবন্দি থাকার পর বৃহস্পতিবার লকডাউন উঠে যেতেই বর্ধমানের রাস্তায়, বাজারে লক্ষ্য করা গেল মানুষের থিকথিকে ভিড়।
অনেকেই জানিয়েছেন, এতদিন সংসারের প্রয়োজনের দ্রব্যাদি সংগ্রহ করার সুযোগ না পাওয়ায় এদিন বাজারে বেরিয়েছিলেন। আবার অনেককেই দেখা গেছে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়াই জাস্ট বেরোতে হবে তাই বেড়িয়েছেন। যার ফলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই ভিড় দেখে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, বর্ধমান শহরে করোনার সংক্রমণ এখনো কমেনি, বরং তা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। গত আটচল্লিশ ঘন্টায় এই শহরেই ২৬ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে শুধু এদিনই জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩জন। এর মধ্যে বর্ধমান শহরে নতুন করে এদিন সংক্রমিত হয়েছেন ৯জন। নতুন করে এদিনই শহরে ৮টি কন্টেইনমেন্ট জোন তৈরি হয়েছে। করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৪থেকে বেড়ে জেলায় এদিন হয়েছে ১৬। এদিন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছলো ৭৭৮ জনে। এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫১১জন। ববৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫১জন। মোট কন্টেইনমেন্ট এলাকা রয়েছে ১৪৫ টি।
স্বাভাবিকভাবেই, আতঙ্ক, আশঙ্কার পরিবেশ থেকে কোনোভাবেই বেরোতে পারছেন না শহর তথা জেলাবাসী। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বহু মানুষের শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে। অনেকেই নিজেদের উদ্যোগে হাসপাতালে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা জমা দিচ্ছেন। আর সেই সময়ই একসঙ্গে এত মানুষ রাস্তায়, বাজারে বেরিয়ে পড়ায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিন সকালে বর্ধমান স্টেশন বাজার,পুলিশ লাইন বাজার,নীলপুর বাজার সহ বিভিন্ন সবজি বাজারে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন উঠে গিয়েছে মানেই যে ঘরের বাইরে স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়ানো যাবে এমনটি নয়। বরং এই পরিবেশে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাই সব কিছু খোলা থাকলেও বাসিন্দাদের সচেতন থাকতে হবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে এখনই না বেরোনোই ভালো।
জরুরি প্রয়োজনে বেরোতে হলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা অবশ্যই জরুরি। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা সেরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরে যাওয়াই শ্রেয়। নচেৎ  সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আর এই অবস্থার প্রেক্ষিতেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন, প্রশাসন কঠোর না হলে ফের শহরে কড়া লকডাউনের পথেই যেতে হতে পারে।

আরো পড়ুন