---Advertisement---

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ব্যালকনি থেকে পরে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত এল ফরেনসিক টিম

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: মঙ্গলবার গভীর রাতে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের তিনতলার ব্যালকনি থেকে রহস্যজনক ভাবে নিচে পরে মারা গিয়েছিলেন সার্জারি বিভাগের হাউস স্টাফ সেখ মোবারক হোসেন। এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন পড়েছিল মেডিকেল কলেজ জুড়ে। আর বৃহস্পতিবার সেই মৃত্যুর তদন্তে কলকাতা থেকে ৩ সদস্যের ফরেনসিক দল এল বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ৩নং বয়েজ হোষ্টেলে। সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী ও থানার পুলিশ অফিসারেরা। 

বিজ্ঞাপন

এদিন ফরেনসিক টিম খড় দিয়ে তৈরি একটি ড্যামি নিয়ে ঠিক যেভাবে ওই ছাত্রের দেহ তিনতলার ব্যালকনি থেকে নীচে পড়েছিল তার পুননির্মাণ করেন। যদিও এদিন টিমের সদস্যরা কেউই তদন্তের স্বার্থে মুখ খুলতে চাননি। এদিন ঘটনাস্থল থেকে রক্তের নমুনাও তাঁরা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। যেভাবে বলা হয়েছিল, তিনতলার ব‌্যালকনি থেকে মোবারক পড়ে গিয়ে মারা যান – তার সত্যতা খতিয়ে দেখতে এদিন তিনতলার ওই ব্যালকনি থেকে খড়ের তৈরী ড্যামি তিনবার নিচে ফেলা হয়। দেখা যায়, ঠিক যেখানে পড়ার কথা সেখান থেকে কয়েকহাত দূরে মোবারকের দেহ পাওয়া যায়। 

কিভাবে মোবারক হোসেনের দেহ কিছুটা দূরে গিয়ে পড়েছে তা নিয়েও তাঁরা পূঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেন। পাশপাশি মোবারক হোসেনের দেহ উপর থেকে নিচে পরার পর একতলার যে ছাত্ররা আওয়াজ শুনতে পেয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গেও এদিন ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা কথা বলেন। এদিকে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজের মেধাবী এই ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে হোষ্টেলের সুপারের কর্তব্যে কোনো গাফিলতি ছিল কিনা তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে এই হোষ্টেলের তিনতলা থেকে সৌরভ দাস নামে এক ছাত্র পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। আর এই ঘটনার পরই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্র এবং ছাত্রী হোষ্টেলের ছাদে ওঠা বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়। জানা গেছে, এই আবেদন জানানোর পর কিছু হোষ্টেলে তা মানা হলেও অনেক হোষ্টেলেই তা আর মানা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।

 এমনকি মেডিকেল কলেজের এই হোষ্টেলের পিছনে মদের বোতল থেকে আপত্তিকর একাধিক জিনিস পড়ে থাকতে দেখে অনেকেরই চোখ কপালে উঠেছে। তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। এব্যাপারে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সাদ্দাম জানিয়েছেন, মোবারক হোসেনের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কিভাবে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এই হোষ্টেলে বারবার একইধরণের ঘটনা ঘটছে কেন সে ব্যাপারে আরও সতর্কতা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে হোষ্টেল সুপারদেরও তাঁদের কর্তব্যে কোনো গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। 

আইএমএ-এর রাজ্য কনভেনার ডা. উজ্জ্বল বিশ্বাস জানিয়েছেন, মোবারকের মৃত্যু তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন তিনিই মোবারককে ম্যাগাজিন সেক্রেটারী করেছিলেন। অত্যন্ত ভাল ছেলে। আচমকা সে আত্মহত্যা করবে – এটা ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, ঠিক কি ঘটেছে বা এক্ষেত্রে কারও কোনো গাফিলতি বা দোষ আছে কিনা তা পুলিশী তদন্তের পরই জানা যাবে। তবে এই ধরণের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের এবং হোস্টেল পরিচালনার ব্যবস্থার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের আরো বেশি সতর্ক ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া অবিলম্বে প্রয়োজন।
See also  প্রেস লেখা গাড়িতে গুন্ডা নিয়ে ঘুরেছেন দিলীপ ঘোষ, নির্বাচন কমিশন নপুংশক হয়ে গেছে - কীর্তি আজাদ
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---