বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ভোট আসে ভোট যায়, সরকার আসে সরকার যায় – কিন্তু গত ৩০বছরেও পূর্ব বর্ধমানের মেমারী ২ ব্লকের বারকোনা থেকে বসতপুর প্রায় ৯ কিমি রাস্তা এখনও পাকা হল না। এদিকে এই কাঁচা রাস্তার মাঝেই মায়া নদীর উপর তৈরি হয়েছিল কংক্রিটের সেতু। সেটিরও অবস্থায় আজ বিপজ্জনক। খুলে গেছে দুধারের লোহার রেলিং। গর্ত হয়ে মৃত্যু ফাঁদ তৈরি হয়েছে।
তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এই সেতু পেরিয়ে যাতায়াত করছেন প্রায় ১০টি গ্রামের ১২হাজার মানুষ। আশ্চর্যের বিষয়, সেতু পাকা হলেও বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেতুর দুদিকের কাঁচা রাস্তা পাকা করার কোনো উদ্যোগই নেয়নি সরকার বা প্রশাসন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে এই রাস্তাকে ঘিরে তিনটি ব্লক – মেমারী ২, বর্ধমান ২ ও বর্ধমান ১ নং ব্লকের মানুষের ক্ষোভ এবার ক্রমশই বাড়তে শুরু করেছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী তুষারকান্তি মণ্ডল জানিয়েছেন, বারকোনা গ্রামটি মেমারী ২নং ব্লকের একেবারে সীমানায় অবস্থিত। ভোগৌলিক অবস্থানের জন্য কার্যত ভাগের মা গঙ্গা পায় না অবস্থা দাঁড়িয়েছে এই রাস্তার। তিনি জানিয়েছেন, একদিকে রয়েছে রাজ্য সড়ক -৮ এবং অন্যদিকে রয়েছে ২নং জাতীয় সড়ক। মাঝখানে রয়েছে বর্ধমান-কালনা রোড। তিনি জানিয়েছেন, বারকোনা গ্রাম থেকে এই রাস্তা প্রায় ৫ কিমি দূরে কাষ্ঠকুড়ুম্বাতে মিশছে। সেখান থেকে আরও ৪ কিমি গিয়ে ৮নং জাতীয় সড়কের সঙ্গে মিশছে। তিনি জানিয়েছেন, এই রাস্তার মধ্যে ইতিমধ্যেই বর্ধমান ১নং ব্লকের অধীনে থাকা রাস্তার অংশটি পাকা হয়ে গেছে। এখন বাকি বর্ধমান ২নং ব্লক এবং মেমারী ২নং ব্লকের অধীনে থাকা মোট ৯ কিমি রাস্তা।
তুযষারবাবু জানিয়েছেন, বর্তমানে এই রাস্তা চলাচলের অনুপযুক্ত। গোটা রাস্তা খানাখন্দে ভরে গেছে। অথচ গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রামবাসীরা এই রাস্তাকে পাকা করার দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্ত গত ৩০ বছরেও কোনো সরকারই আমল দেয়নি গ্রামবাসীদের দাবীকে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মায়া নদীর ওপর দিয়ে যাওয়া এই রাস্তার দাবী দীর্ঘদিনের। নদীর ওপর সেতুটির অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। সবকিছুরই মেরামত দরকার। ফের ভোট আসতে চলেছে। এবার গ্রামবাসীরাই এই অবহেলার উত্তর দেবেন।
এ ব্যাপারে মেমারী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মামণি মূর্মূ জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের দাবী ন্যায্য। তাঁরাও বারবার এই রাস্তার বিষয়টি জানিয়েছেন। সম্প্রতি পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে জেলার প্রায় ৭৫০ কিমি নতুন রাস্তার পরিকল্পনা চাওয়ায় এই রাস্তার পরিকল্পনাও জমা পড়েছে। এখন সবটাই নির্ভর করছে সরকারের ওপর। তুষারকান্তি বাবু জানিয়েছেন, এর আগেও দিদিকে বলো কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর তিনি খোদ মন্তেস্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজার ফেসবুক পেজে এই রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেইসময় বিধায়ক বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এমনকি সংসদ এস এস আহালুবালিয়া নিজে এই রাস্তার বিষয়ে জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তবু এতকিছুর পরও কোনো অজানা কারণে বছরের পর বছর অবহেলিতই থেকে গেছে বারকোনা থেকে বসতপুর পর্যন্ত এই বেহাল কাঁচা রাস্তা পাকা করার কাজ।