ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: হাত ও পা ভাঙা অবস্থায় রোগীকে দেখে চিকিৎসক নিজেই অপারেশন করবেন বলে রোগীর আত্মীয় দের জানিয়েছিলেন। সেই মতো রোগী কে হাসপাতালে ভর্তি করার পর রোগীর আত্মীয়দের না জানিয়েই সেই চিকিৎকের পরিবর্তে অন্য শল্য চিকিৎসকরা রোগীর অপারেশন করে দিয়েছেন। অভিযোগ, যেখানে রোগীর পরিবারের পছন্দের সেই ডাক্তার উপস্থিতই ছিলেন না। আর এর পরই রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় চিকিৎসায় অনিয়মের অভিযোগ জানানো হয়েছে। অভিযোগের কপি জেলাশাসক এবং রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনেও পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রায়না থানার চাঁদপুরের বাসিন্দা রোগী মনসুরা বিবির ছেলে আবু হায়াত। বুধবার এই ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের আলিশার কাছে জিটি রোড ও ২নং জাতীয় সড়কের মাঝে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এদিকে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অপারেশনের পর রোগী সম্পূর্ন সুস্থ আছেন। রোগীর পরিবারের লোকজন যে অভিযোগ করছেন তার কোন ভিত্তি নেই। হাসপাতালের সেরা শল্য চিকিৎসকেরাই অপারেশন করেছেন রোগীর। রোগীর পরিবারের লোকজন যে চিকিৎসক কে দেখিয়েছিলেন তিনি এদিন অন্যান্য রোগীদের দেখতে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্ত থাকায় হাসপাতালের উপযুক্ত অন্য চিকিৎসকরা অতি দ্রুত সফলভাবে রোগীর অপারেশন করেছেন। অপারেশনের পর কোন জটিলতাও রোগীর হয়নি। এমনকি অপারেশনের পর এক্স রে রিপোর্ট রোগীর পরিবারকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে হসপিটালের তরফে কোন অনিয়ম করা হয়নি।
রোগী মানসুরা বিবির ছেলে আবু হায়াত অভিযোগে জানিয়েছেন, “গত ১৫মে আনুমানিক দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ আমার মাকে (মনসূরা সেখ) নিয়ে বর্ধমান কিমস্ হাসপাতালে আসি। আমার মা সেই দিন ১০টার সময় বাড়ির উঠানে পড়ে যান এবং মায়ের হাত ও পা ভেঙ্গে যায়। কিমস হাসপিটালের কর্ণধার ডাক্তার দেবব্রত ব্যানার্জীকে দেখানো হয়। ডাক্তার দেবব্রত ব্যানার্জি তাদের জানান, হাসপাতালে একদিন ভর্তি থাকার পরে আমার মায়ের অপারেশন হবে যা তিনি নিজেই করবেন। আমরা আজ সকালে ১০টা ৩০ মিনিট সময় যখন কিমস হাসপাতালে যাই তখন হাসপাতাল থেকে বলা হয় ডাঃ দেবব্রত ব্যানার্জ্জী চেম্বার করে ও.টি. তে ঢুকবেন তারপর আমার মায়ের অপারেশন হবে।
সেইমতো আমাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই অপারেশনের আগে ডাক্তার বাবুর সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু এরই মধ্যে হাসপাতালের উপর থেকে আমার সেজো দাদা এসে খবর দেন যে মায়ের অপারেশন হয়ে গেছে। যদিও আমরা দেখি ডাক্তার দেবব্রত ব্যানার্জি তখনও চেম্বারে বসে রুগি দেখছেন। আর এরপরই আমরা নিশ্চিত হই যে ডাঃ দেবব্রত ব্যানার্জ্জী আমার মায়ের অপারেশন করেন নি। যে ডাক্তার বাবুকে (দেবব্রত ব্যানার্জী) দেখিয়ে রুগিকে ভর্তি করেছিলাম সেই ডাক্তার বাবু আমার মায়ের অপারেশন নিজ হাতে করেন নি। তিনি তা না করে অন্য কোন চিকিৎসক কে দিয়ে আমার মায়ের আপারেশন করিয়েছেন। এই ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত।” যদিও রোগীর সেজো ছেলে ও অন্য আত্মীয়রা এই ঘটনায় অভিযোগ জানিয়েও রোগীর অপারেশনের পর তিনি সুস্থ আছেন বলেই জানিয়েছেন।