ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের এম এ পার্ট-টু পরীক্ষার ফল এখনও প্রকাশ হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই ছাত্র ছাত্রীদের হাতে আসেনি মার্কশিট। ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্ত্রীপক্ষের কাছে ফল প্রকাশের আবেদন জানিয়েও কোন ফল হয়নি বলে অভিযোগ। আর শেষমেশ সোমবার এই দাবিতেই কলা বিভাগের প্রায় চারশো ছাত্র ছাত্রী তুমুল বিক্ষোভ দেখালো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক্যাম্পাসে পরীক্ষা নিয়ামকের দপ্তরে।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, ২০১৯ – ২০২১ শিক্ষাবর্ষের সময়সীমা পার হয়ে গেলেও এম এ পার্ট-২ পরীক্ষার ফলাফল বের করতে পারেনি কর্ত্রীপক্ষ। বারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেও কোনো সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের । মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে বার বার ঘোরাচ্ছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের আরোও অভিযোগ পরীক্ষা ২০২১ এর সেপ্টেম্বর মাসে হবার কথা থাকলেও তা নেওয়া হয় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও ফলপ্রকাশ না হওয়ায় তারা অন্য কোর্সে ভর্তি হলেও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ছাত্র ছাত্রীরা জানিয়েছেন, তারা মাইগ্রেসন জমা দিতে পারে নি। ফলে যেকোন সময় সেই কোর্সে ভর্তিও তাদের বাতিল হতে পারে।
আর ফলপ্রকাশ ও মাইগ্রেসন এই দুই দাবীতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলারের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় দূরশিক্ষা বিভাগের মাষ্টার ডিগ্রীর পড়ুয়ারা। ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভে কন্ট্রোলারের দপ্তরের গেটে তালা লাগিয়ে দিলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে পড়ুয়ারা। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্র ছাত্রীরা সোমবার জড়ো হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। এই তীব্র গরমের মধ্যেও রীতিমতো পোস্টার ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হয় তারা। তাদের দাবী, অবিলম্বে মাষ্টার ডিগ্রির ফলাফল প্রকাশের দিনক্ষণ লিখিত ভাবে জানাতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত কিছু দিচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ আন্দোলন চলবে বলে হুশিয়ারী দেয়।
পরে পরীক্ষা নিয়ামকের আশ্বাসে আন্দোলন ওঠে।
পরীক্ষ নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যেতি পাল বলেন, ‘খুব তাড়াতাড়ি ফল প্রকাশ করা হবে।’ যদিও কি কারণে ফল প্রকাশের দেরী সে বিষয়ে কোন সদুত্তর কর্ত্রীপক্ষের তরফে পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল প্রকাশের দাবীতে পড়ুয়াদের আন্দোলন এই প্রথম নয়। ফল প্রকাশে দেরী হওয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এসএফআই এর জেলা সম্পাদক অনির্বান রায়চৌধুরীর অভিযোগ, স্বজন পোষন করে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তারা নির্দিষ্ট কাজ নির্দিষ্ট সময়ে করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্যই ফল প্রকাশে দেরী।পাশাপাশি তাদের আরোও অভিযোগ, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেমন ভেঙে পড়েছে তেমনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামোও কার্যত ভেঙে পড়েছে।