জেলাজুড়ে পুলিশি অভিযান জারি, সাতদিনে উদ্ধার প্রায় ৫০০বোমা, ৪৫টি বন্দুক, গ্রেপ্তার ৫০

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র,বোমা,বারুদ উদ্ধার হয়েই চলছে জেলা জুড়ে।  খোদ বর্ধমান শহরে বৃহস্পতিবার রাতে লাকুড্ডি এলাকা থেকে পুলিশ নাজেম শেখ নামে এক বোমা সরবরাহকারীকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে  চারটে ওয়ান সাটার পাইপগান, আট রাউন্ড  গুলি ও ৩৪ টি সুতলি বোমা। বোমা গুলি তিনটে নাইলনের ব্যগে তুষ দিয়ে ঢাকা অবস্থায় নিয়ে এসেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানার হাটগাছা এলাকার বাসিন্দা ধৃত নাজেম শেখ। 

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় এই সমস্ত বন্দুক ও বোমা সাপ্লাই করার উদ্দেশ্য ছিল এই দুষ্কৃতীর। যদিও বর্ধমান থানার পুলিশের কড়া নজরদারিতে দুষ্কর্ম করার আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল ভিন জেলা থেকে আসা এই বোমা সরবরাহকারী। 
ধৃতকে শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে দশ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে আবেদন জানালে আদালত সাত দিনের হেফাজতে হেফাজত মঞ্জুর করেছে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায় জানিয়েছেন, বর্ধমানে কোথায় এই আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা সাপ্লাই করার জন্য নাজেম শেখ এসেছিল তা হেফাজতে নেবার পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে বের করা হবে। উদ্ধার হওয়া বোমা, বন্দুক কোথা থেকে নিয়ে আসছিলো, কারা এই ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত সেইসব বিষয়েও জানবে পুলিশ। এদিকে পুলিশের জেলা জুড়ে লাগাতার অভিযানের মধ্যেও এভাবে বোমা বন্ধুকের সাপ্লাই দিতে আসায় পুলিশের মধ্যেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কিভাবে এই বোমাগুলি নিয়ে এলো নাজেম শেখ সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বোমা, বন্দুক নিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত করা এই মুহূর্তে খুব সহজ বিষয় নয়। সেক্ষেত্রে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হতে পারে স্থানীয় কোন জায়গা থেকে এইসব বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র এনে সেগুলিকে সাপ্লাই করার পরিকল্পনা করেছিল নাজেম। সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,২৪মার্চ থেকে ৩১ মার্চ অবধি জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে প্রায় পাঁচশোটি। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৪৫টি। গুলি উদ্ধার হয়েছে ৮১টি। বোমা তৈরীর মশলা উদ্ধার হয়েছে ৩ কেজি। অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার করে হয়েছে ৪৯ জন কে। জেলার পুলিশ সুপার কামনাশীস সেন বলেন, ‘এলাকায় টহলদারি, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের প্রক্রিয়া ধারাবাহিক ভাবেই সারা বছর চলে। বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার হওয়া বোমা নিষ্ক্রিয় করার জন্য বোম্ব স্কোয়াডের টিম কে গত কয়েকমাসে বহুবার ডাকতে হয়েছে। তবে এখন বিশেষ অভিযান চলায় বোমা, বন্ধুক উদ্ধারের সংখ্যাটা অনেকটাই বেড়েছে। এই প্রক্রিয়া আগামীদিনেও চলবে একইভাবেই।’

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে খন্ডঘোষ থানার পুলিশ দইচাদা এলাকা থেকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া তিনজন দুস্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় নাইট পেট্রোলিং চলার সময় রাত দুটো নাগাদ তিনজন কে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে টহলদারি পুলিশ ভ্যানের সন্দেহ হওয়ায় তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকায় আলিবর শেখ, আল্লারাখা শেখ ও শেখ রানা নামে তিন যুবক কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতরা জেরায় স্বীকার করেছে এলাকায় ডাকাতি করার উদ্দেশ্যেই তারা জড়ো হয়েছিল। ধৃতদের এদিন বর্ধমান আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

আরো পড়ুন