বাঁকুড়ায় ভরদুপুরে শ্যুট আউট, গুলিবিদ্ধ গলসির দুই তৃণমূল নেতা, পলাতক সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত এক আসামি, চাঞ্চল্য

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বাঁকুড়া: সাত বছর জেলে বন্দী থাকার পর জামিনে মুক্ত পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক আসামিকে নিয়ে আসার পথে বাঁকুড়ার কেশিয়াকোল এলাকায় ভর দুপুরে বাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতীর মুহুর্মুহু গুলিতে গুলিবিদ্ধ হলো তিনজন ব্যক্তি। যদিও শ্যুট আউটের ঘটনা চলাকালীনই চারচাকা গাড়ি থেকে কোনোভাবে নেমে চম্পট দেয় সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দী সাদ্দাম শেখ। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করার পাশাপাশি একদিকে যেমন ফেরার সাদ্দাম শেখের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে, অন্যদিকে বাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতিকে খুঁজে বের করতে জেলা ও জেলার পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি এদিন সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছেন, ‘একজন জামিনপ্রাপ্ত আসামিকে নিয়ে মোট ছয় জন একটি নীল রংয়ের চারচাকা গাড়িতে করে যাবার সময় কেশিয়াকোল এলাকায় একটি বাইকে দুজন দুষ্কৃতী পিছন থেকে এবং ওভারটেক করে সময় পাশ থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। গুলিতে তিনজন আহত হয়েছেন। একজনের বুকে গুলি লেগেছে। অন্য দুজনের গুলি শরীর ছুঁয়ে বেরিয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশ দুষ্কৃতীদের আটকাতে পাল্টা দু থেকে তিন রাউন্ড গুলি চালায় তাদের লক্ষ্য করে, কিন্তু জায়গাটি জনবহুল হওয়ায় থেমে যেতে হয় পুলিশ কে। দ্রুত জখম তিনজনকেই উদ্ধার করে বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। বুকে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করা হয়েছে। সকলেই পর্যাপ্ত চিকিৎসার অধীনে রয়েছেন। যদিও সাদ্দাম শেখ নামে যে আসামিকে নিয়ে আসছিল গাড়িটি, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে খুঁজে পায়নি। তার খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। একইসাথে দুষ্কৃতীদের খোঁজে জেলাজুড়ে ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হল নুরমহম্মদ শা ওরফে টগর, বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানা এলাকার তেঁতুলমুড়ি। শেখ জিয়াবুল ওরফে বাগাই, বাড়ি গলসির দয়ালপুর এলাকায় এবং গোবিন্দ মন্ডল, বাড়ি বাঁকুড়ায়। বাকি চারচাকা গাড়িতে আসামি সাদ্দাম শেখ ও চালক ছাড়াও ছিল গলসির গোহগ্রামের বাসিন্দা শেখ রবিউল। তিনি জনিয়েছেন, ‘বাঁকুড়া কোর্ট থেকে বেরোনোর পরই একটি বাইকে দুজন তাদের ফলো করতে শুরু করে। কেশিয়াকোলের কাছে আসতেই দুষ্কৃতীরা গাড়ির পিছন থেকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে, এমনকি গাড়ির পাশে এসেও গুলি চালায়। চালক গাড়ি থামিয়ে দেয়। প্রায় ৬ থেকে ৭রাউন্ড গুলি করে ওরা। আমি গাড়ির সিটের নিচে বসে যাওয়ায় কোনক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছি। তিনজনের গুলি লেগেছে।’

জানা গেছে, বাঁকুড়ায় গুলিবিদ্ধ গলসির নুরমহম্মদ শা ওরফে টগর তৃণমূলের আইএনটিটিইউসি এর নেতা। তাছাড়াও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সেখ জিয়াবুল হক ওরফে বাগাই। বাগাই গলসি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা নমিতা সেখের স্বামী। তিনি দয়ালপুর গ্রামের বাসিন্দা। এদের সঙ্গেই ছিলেন গোহগ্রামের সেখ রবিউল। তিনিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা। শ্যুট আউটের ঘটনায় বুকে গুলি লেগেছে বাগাই এর। টগরের কাঁধে গুলি লাগে। সকলেই বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ একটি অল্টো চারচাকা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন