করোনা পরিস্থিতি হোক কিম্বা ইয়াস – মাঠে নেই বিজেপির সাংসদ থেকে নেতা-কর্মীরা, নিজেদের পিঠ বাঁচাতেই ব্যস্ত তারা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর কেটে গেছে অনেকগুলো দিন। চলছে গোটা রাজ্য জুড়েই লকডাউন, করোনা নিয়ে মহামারী। কিন্তু দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের দেখা মিলছে না এই করোনা মহামারীর সময়েও। কার্যত দলীয় কর্মীরাও চুড়ান্তভাবেই দিশাহারা। 

বিজ্ঞাপন
পূর্ব বর্ধমানে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে যে সমস্ত বিজেপি কর্মীরা দিনরাত এক করে দলের জন্য খেটেছেন সেই সমস্ত কর্মীরা এখন রীতিমত আতংকিত। দলের উর্ধতন নেতাদের কাছ থেকে তেমন কোনো সাহায্যই পাচ্ছেন না তাঁরা। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, দলের জেলা সভাপতি অভিজিত তা-কে ফোন করলেও তাঁকে বিপদের সময় পাওয়া যাচ্ছে না। 

সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখানো কর্মীরা এখন সাধারণ মানুষের উপকারে লাগার আগে নিজেদের বাঁচাতেই কার্যত ব্যস্ত। বিজেপির বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের আহ্বায়ক কল্লোল নন্দন জানিয়েছেন, ভোটের ফল ঘোষণার পর এখনও এই বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ২০০ কর্মী ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০০জনকে বিজেপির জেলা অফিসে আশ্রয় দেওয়া হলেও বাকিরা আত্মগোপন করে লুকিয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁদের কাছে প্রথম অগ্রাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা দেওয়া। কল্লোলবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে দফায় দফায় অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি।

 উল্লেখ্য, সোমবারই বিজেপির জেলা কমিটির একটি প্রতিনিধিদল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে জেলায় আইন শৃঙ্খলাবজায় রাখা এবং বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ওপর শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অত্যাচার, সন্ত্রাস বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী সন্দীপ নন্দী, জেলার সহ সভাপতি প্রবাল রায়, জেলা কমিটির সম্পাদক সুনীল গুপ্তা, সৌম্যরাজ ব‌্যানার্জ্জী, নব হাজরা প্রমুখরা।

 এদিন বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন, গোটা জেলার ৯টি বিধানসভা (বিজেপির সাংগঠনিক বর্ধমান জেলা) এলাকায় তৃণমূলের সন্ত্রাসে প্রায় হাজারখানেক কর্মী ঘরছাড়া। গলসীর মনোহরসুজাপুর, মল্লসারুল, ভাতার প্রভৃতি জায়গায় মহিলাদের ওপর অত্যাচার করা, নগ্নকরে ঘোরানো, জমির ফসল কাটতে না দেওয়া, কোথাও কোথাও জোর করে জমির ধান কেটে নিয়েছে। এমতবস্থায় অবিলম্বে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন জানানো হয়েছে। 

এদিকে, ভোটের ফল ঘোষণার পর বর্তমানে করোনার মহামারী সময়েও দেখা যাচ্ছে না বিজেপির বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুরেন্দ্রজিত সিংহ অহলুবালিয়াকে। ভোটের সময় যেখানে তিনি দিনরাত চষে বেড়িয়েছেন বর্ধমান, সেখানে করোনার সময় কোনো মানুষকে সাহায্যের জন্য তাঁকে এগিয়ে আসতে দেখা না যাওয়ায় প্রশ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে। যদিও কল্লোল নন্দন জানিয়েছেন, সাংসদের দাদা করোনায় মারা যাওয়ায় তিনি আসতে পারছেন না। 

পাশাপাশি তিনি স্বীকার করেছেন, করোনার সময় বিজেপি কর্মীদের রক্ষা করতে গিয়েই এখনও তাঁরা সাধারণ মানুষকে সাহায্যের জন্য পথে নামতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপুরে বিজেপির পক্ষ থেকে পথে নামা হয়েছে। তবে তাঁরা তৈরী হয়েছেন। চলতি সপ্তাহ থেকেই তাঁরা শুখনো খাবার দেবার জন্য পথে নামতে চলেছেন।

অপরদিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিত তা জানিয়েছেন, ভোটের ফল ঘোষণার পর ২ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত তিনি কর্মীদের ফোন ধরেছেন এবং যথাসাধ্য সাহায্যের চেষ্টা করেছেন। সকাল থেকে রাত্রি ১১টা পর্যন্ত অফিসে থেকে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ১২ তারিখ থেকে তাঁর জ্বর আসে। এরপরেই তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। তাঁর জায়গায় অফিস ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রবাল রায়কে।

আরো পড়ুন