ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান:লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা সংক্রমণ। রাস্তায় নেমে জনসাধারণকে সচেতন করতে হচ্ছে জেলা পুলিশকেও। মঙ্গলবারই জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জেলার ১৬টি নবনির্বাচিত বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করে কোমড় বেঁধে কাজে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, মঙ্গলবার জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫২জন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এদিন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে মারা গেছেন ৪৬জন। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা অনেক বেশি। এমতবস্থায় জেলার সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে বর্ধমান পুরসভা এলাকায়। মঙ্গলবারই বর্ধমান পুরসভা এলাকায় নতুন করে ১৬১জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে জেলায় আরও কোভিড হাসপাতাল বা সেফ হোমের চাহিদা তৈরী হয়েছে।
বর্ধমান পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত গুহ জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভার জলকল মাঠে যে প্রান্তিক বিয়েবাড়ি ছিল সেটাকেই এখন অস্থায়ী সেফ হোম করা হয়েছে। আপাতত ২৫টি বেড থাকছে সেখানে। প্রয়োজনে বেড বাড়িয়ে ৪০ পর্যন্ত করা যেতে পারে। অন্যদিকে, পুরসভার আলমগঞ্জের ঝুরঝুরে পুলের নিজস্ব চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ভ্যাকসিন ব্যবস্থাকে। অমিতবাবু জানিয়েছেন, যেহেতু ঝুরঝুরে পুলের এই চিকিৎসা কেন্দ্রে ইনডোর এবং আউটডোর দুটি পরিষেবাই চালু রয়েছে। রোগীও ভর্তি রয়েছেন এখানে।
স্বাভাবিকভাবেই কোভিড ভ্যাকসিন নিতে আসা কারও করোনা পজিটিভ হলে গোটা চিকিৎসা কেন্দ্রকেই বন্ধ করে দিতে হবে। তাই আগাম সাবধানতা হিসাবে এখান থেকে ভ্যাকসিন দেবার ব্যবস্থাকে সরিয়ে তাঁরা ছোটনীলপুরের পুরসভার দক্ষিণায়ন বিয়েবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিকে, এরই পাশাপাশি বর্ধমানের নির্মল ঝিল শ্মশানে গ্যাস চুল্লীর মেরামতির কাজ ১৮ মে-র মধ্যে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বরাতপ্রাপক ঠিকাদার সংস্থাকে নির্দেশ দিল পুরসভা।
অমিতবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা ঠিকাদার সংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছেন ১৮ তারিখের মধ্যে গ্যাস চুল্লীর মেরামতির কাজ শেষ করে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। তাঁরা চাইছেন ১৯ মে থেকে ফের গ্যাস চুল্লীকে চালু করে দিতে। কারণ যেভাবে প্রতিদিনই মৃতদেহের চাপ বাড়ছে তাতে একটি ইলেকট্রিক চুল্লী এবং কাঠ ব্যবস্থায় সংকুলান হচ্ছে না। এরই পাশাপাশি মৃতদেহ পোড়াতে নিয়ে আসাকে ঘিরে একশ্রেণীর দালালদের দৌরাত্ম নিয়েও পুরসভা কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। অমিতবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযোগ পাচ্ছিলেন অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে কেউ কেউ মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য তদ্বির তদারক করছিলেন।
যদিও এব্যাপারে পুরসভার পক্ষ থেকে তদন্ত করা হয়। তদন্তে দেখা যায় এই ঘটনায় পুরসভার কোনো কর্মী বা ডোম এই কাজে যুক্ত নন। বেসরকারী নার্সিংহোম বা হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মীই এই কাজ করছিলেন। এজন্য তাঁরা নির্দেশ দিয়েছেন নির্মল ঝিল শ্মশানে মৃতদেহ পোড়ানোর কাজ করবেন পুরসভা নিযুক্ত কর্মীরাই। সেজন্য তাঁদের আলাদা করে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করবে পুরসভা। বাইরের কেউ এই কাজ করতে পারবে না।