১১৮ বছর পর ঐতিহ্যবাহী কার্জন গেটের দুদিকে বসছে রাজা রানির মূর্তি, অভিনব উদ্যোগ বিধায়কের

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, বর্ধমান: ১১৮বছর পর বর্ধমানের ঐতিহাসিক স্থাপত্য বিজয় তোরণের প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন মহারাজা বিজয়চাঁদ ও মহারানী রাধারাণী দেবীর মূর্তি বসতে চলেছে খোদ বর্তমান কার্জন গেট তথা বিজয় তোরণের দুদিকে। আর এই অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। তিনি জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষে কিংবা আগামী মাসের গোড়ায় এই দুই রাজা রাণীর মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে বর্ধমানে আসছেন বর্ধমান রাজ পরিবারের বর্তমান প্রতিনিধি।

বিজ্ঞাপন

খোকন দাস বলেন,” আমি বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই ঐতিহাসিক বর্ধমান শহর কে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ঐতিহ্যবাহী কার্জন গেটের ৩০০ফুটের মধ্যে দৃশ্য দূষণকারী সমস্ত বিজ্ঞাপনের বোর্ড, হোর্ডিং, ফ্লেক্স খুলে ফেলা হয়েছে। কার্জন গেটকে আরো দৃশ্যমান করার জন্য দুদিকের বাড়ি সহ সংলগ্ন এলাকা কে নীল সাদা রং করে পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করেছি। কার্জন গেট কে রঙিন আলোয় আলোকিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর এই কার্জন গেটের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা ও রাণীর পূর্ণাবয়ব দুটি মূর্তি বসানোর ব্যবস্থা করেছি। এখন সেই মূর্তি তৈরি হচ্ছে, খুব শীঘ্রই মূর্তি দুটি তোরণের দুদিকের রেলিংয়ের মধ্যে বসানো হবে। ফলে বর্তমান প্রজন্ম যেমন জানতে পারবেন এই মহান ব্যক্তিদের সম্মন্ধে। পাশাপাশি বর্তমান কার্জন গেটের শতাধিক বছরের ইতিহাস সম্পর্কেও অভিহিত হতে পারবেন সকলেই। ”

বর্ধমানের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ বলেন, ” এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। বিধায়ক কে এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সাধুবাদ জানাই।বর্ধমান মহারাজ বিজয়চাঁদ মহাতাব ১৯০৪ সালে তৎকালীন বড়লাট লর্ড কার্জন কে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে বর্ধমান শহরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। লর্ড কার্জনকে সম্মাননা জানানোর জন্য বিজয়চাঁদ জি টি রোড এবং বি সি রোডের সংযোগ স্থলে একটি অপূর্ব প্রবেশ দ্বার নির্মাণ করান। বর্তমানে এটি লোকমুখে “কার্জন গেট” নামে পরিচিত হলেও,  উদ্বোধনের সময় নাম দেওয়া হয়েছিল “স্টার অফ ইন্ডিয়া”। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় “বিজয় তোরণ”। আরও পড়ে যেহেতু লর্ডের আগমন উপলক্ষে এই তোরণ তৈরি করা হয়েছিল তাই এই তোরণের নাম হয়ে যায় কার্জন গেট।”

অন্যদিকে ঐতিহাসিক মূর্তি দুটির নির্মাতা বর্ধমানের প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী মঙ্গল পাল বলেন,” বিধায়ক খোকন দাসের ইচ্ছায় মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করেছি। এখন রাজা, রাণীর ছবির আদলে মাটির মূর্তি তৈরির কাজ চলছে। এই ছাঁচের উপর পরে স্টোন ডাস্ট, রেজিন আঠা, ফাইবার ইত্যাদির মিশ্রণ দিয়ে পূর্ণাবয়ব মূর্তির রূপ দেওয়া হবে। মহারাজা বিজয়চাঁদ এর মূর্তির উচ্চতা হচ্ছে সারে ছ’ফুট। অন্যদিকে মহারানী রাধারাণী দেবীর মূর্তির উচ্চতা হবে একটু কম, প্রায় ছয় ফুট তিন ইঞ্চি। আরও কিছুদিন সময় লাগবে সম্পূর্ন এই মূর্তি দুটি প্রস্তুত করতে। সম্পূর্ন হলে বিধায়কের সম্মতিতে ফিনিশিং টাচ দেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন