---Advertisement---

জামালপুরে পুজোর চাঁদার বাহানায় রাতে বালির গাড়ি থেকে গ্রামবাসীদের তোলাবাজির অভিযোগ, পুলিশি অভিযান

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: সরস্বতী পুজোর চাঁদা তোলার নাম করে গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে রাতের অন্ধকারে চলছে বালির গাড়ি থেকে তোলাবাজি। আর এই কাজে রীতিমত একাধিক পরিবারের মহিলারাও রাস্তায় নেমে পুরুষদের সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। যেহেতু দিনের আলোয় গ্রামের রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই লরি যাতায়াত নিষিদ্ধ, সেই কারণেই নাকি রাতে চাঁদা তুলতে গ্রামবাসীরা রাস্তায় নেমে পড়ছে। গাড়ি প্রতি ১০০থেকে ২০০টাকা করে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। একজন, দুজন নয় – রীতিমত ২০থেকে ২২টি পরিবারের লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে বালির গাড়ি থেকে জোর জবরদস্তি টাকা আদায় করছে দিনের পর দিন। ফলে বালির গাড়ির চালকদেরও একাংশ এইনিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। পুলিশের কাছেও স্থানীয় এলাকাগুলো থেকে ইতিমধ্যে চাঁদার জুলুমের অভিযোগ পৌঁছেছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের বেড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের শম্ভুপুর, সাদিপুর, জামুদহ, চক্ষণজাদি, বেড়ুগ্রাম, নখারী, কারালাঘাট সহ একাধিক গ্রামের রাস্তায় প্রতিদিন রাতে চলছে এই সরস্বতী পুজোর চাঁদা তোলার নামে তোলাবাজি। জামালপুর থানার পুলিশ গ্রামবাসীদের বারবার সচেতন করে রাতে চাঁদা না তোলার জন্য আবেদন জানালেও, গ্রামবাসীরা সেই আবেদনে সারা দেয়নি। বরং পুলিশের টহলদারি গাড়ি এলাকা থেকে ফিরে গেলেই চাঁদা পার্টিরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে। অভিযোগ, যে সমস্ত গাড়ি চাঁদা দিতে অস্বীকার করছে তাদের ওপর নানান ধরনের জুলুমবাজি চালাচ্ছে এই সমস্ত চাঁদা আদায়কারীদের একাংশ। এমনকি পাথর ছুঁড়ে গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া থেকে চালকদের হেনস্থা পর্যন্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাড়াহুড়ো করে উপদ্রব এড়াতে অনেক সময়ই ছোটখাট দুর্ঘটনাও ঘটছে। কিছুদিন আগেই এলাকার একটি লাইট পোস্ট লরির ধাক্কায় ভেঙে হেলেও যায়। বেশ কয়েকদিন এলাকায় আলো ছিলনা। পুলিশের উদ্যোগেই যোগাযোগ করে ফের স্বাভাবিক করা হয় বিদ্যুৎ সংযোগ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ দিন আগে বেড়ুগ্রাম শিবতলা ও ঘোষপাড়া এলাকায় এইরকমই চাঁদার জুলুম বাজির খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে মহিলাও ছিল। যদিও রাতেই তাদের ফের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ আটক করা গ্রামবাসীদের অনেককে বেধড়ক মারধর করেছে। মহিলাদের ওপরেও নির্যাতন করা হয়েছে। যদিও গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোথাও কোন অভিযোগ জানানো হয়নি বলেই স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

See also  ৫০ বছরেও ভাইদের হত্যাকাণ্ডের বিচার পাইনি - ক্ষোভ উগরে দিলেন সাঁইবাড়ির মেয়ে

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত ১২টার সময় এলাকার লোকজন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি আটকে পুজোর চাঁদা তুলছিল বলে খবর আসে থানায়। সেইমতো ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি কোন অনুমতি ছাড়া রাস্তা আটকে গাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে কিছু লোকজন কে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ সূত্রে আরো জানা গেছে, দিনের পর দিন বিভিন্ন পুজোর চাঁদা তোলার নামে এই এলাকার কিছু মানুষ রীতিমত পারিবারিক ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। যেকোন সময় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গ্রামবাসীদের বারবার সতর্ক, সচেতন করার পরেও তারা একই ভাবে গভীর রাতে রাস্তায় গাড়ি আটকে চাঁদা তুলছে। তবে গ্রামবাসীদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের জামালপুর ব্লক সভাপতি মেহমুদ খান এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘ এলাকার মানুষের সমস্যা নিয়ে মাঝেমধ্যে পুলিশের কাছে কিছু আবেদন জানাতে হয়। আইনের সবদিক মেনে পুলিশ কোন সময় সেই আবেদনে সারা দেয়, আবার কখনো সেটা হয়ে ওঠে না। তবে রাতে রাস্তায় বালির গাড়ি থেকে গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলছে এই ব্যাপারে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। তবে এখন জানতে পারলাম, খোঁজখবর নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---