কুনাল চট্টোপাধ্যায়, জামালপুর, পূর্ব বর্ধমান: জলবাহিত আন্ত্রিকে আক্রান্ত প্রায় ১৪ জন গ্রামবাসী। পুকুরের জল ব্যবহারই প্রকৃত কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। একমাত্র পানীয় জলের কলের উপর ভরসা, তাও মাঝেমধ্যেই খারাপ।স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের আঝাপুর পঞ্চায়েতের মোহনপুর গ্রামে এই নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, গ্রামের পুকুরের জলই তারা সব কাজে ব্যবহার করেন। একমাত্র পানীয় জলের কলটি রয়েছে গ্রামের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে। তার ওপরই ভরসা করতে হয় গ্রামবাসীদের। কিন্তু সেই কল মাঝেমধ্যেই খারাপ হয়ে পরে থাকে। অভিযোগ, তা সারানোর জন্য পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের কোন উদ্যোগ দেখা যায় না। গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগেই চাঁদা তুলে মাঝেমধ্যে ওই একমাত্র কল সারিয়ে ব্যবহার করেন। কিন্তু একান্ত উপায় না থাকায় তারা পুকুরের জল ব্যবহার করেন বলেই দাবি করেছেন।
এই ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুকুরের জল ব্যবহার না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাতে গ্রামবাসীরা আরও বিপাকে পড়েছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, পুকুরের জল ব্যবহার না করলে বাড়ির সমস্ত কাজের জলের যোগান কোথা থেকে পাবেন তারা ? এ নিয়েই তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এদিকে ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা গিয়ে ক্যাম্প করেছে এবং বাড়ি বাড়ি তারা পরিদর্শন করছেন।
গ্রামবাসীদের দাবি গ্রামের এক ব্যক্তির এই আন্ত্রিকের কারণে মৃত্যু হয়েছে। যদিও প্রশাসন মানতে নারাজ। জামালপুরের বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি এদিন এলাকা পরিদর্শনের পর জানিয়েছেন, ’স্বাস্থ্য দপ্তর গোটা বিষয়টি দেখছে। একটি পুকুরের জল ব্যবহারের ফলেই হয়তো কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে যার মৃত্যু হয়েছে তাঁর বয়সজনিত বিভিন্ন অসুখের সমস্যা ছিল, তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা সজাগ রয়েছে। ’ অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় জানিয়েছেন, ’কোন খাবার জনিত বিষক্রিয়া থেকে এই সমস্যা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। তবুও গোটা বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্ষার পর পুকুরের জল ব্যবহার করলেও অনেকসময় সমস্যা তৈরি হয়। স্বাস্থ্য দপ্তর গোটা বিষয়টা খতিয়ে দেখছে। পাশাপশি অবিলম্বে এলাকার পুকুরের জল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’