ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের পলিতপুরের লোহা কারখানায় ফার্নেসে জোরালো বিস্ফোরণের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কারখানায় পৌঁছালো তদন্তকারী দল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কার্যত ভিতে ফাটল ধরে যাওয়ার কারণে উপরের ছাদ ভেঙে পড়ে বিপত্তি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন তদন্তকারী দল। সোমবার পালিতপুরে লোহার রড তৈরির কারখানায় দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের ফ্যাক্টরি ইন্সপেক্টর টিম কারখানাটি পরিদর্শন করেন। তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলাশাসককে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।

অন্যদিকে, এই ঘটনায় পরিদর্শনে এসে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষেরই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। পাশাপাশি, এই ধরনের ঘটনা রুখতে ও শ্রমিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আইএনটিটিইউসি বিশেষ পর্যবেক্ষক দল গঠন করবে বলে জানানো হয়েছে। এদিন কারখানার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলাশাসকের কাছে দেওয়া রিপোর্টে ফ্যাক্টরি ইন্সপেক্টর টিম জানিয়েছে, কারখানার ইন্ডাকশন ফার্নেসে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ওই অংশের ভিতে ফাটল ধরে। এরফলে মাথার উপরের ছাদ ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় ওই ফার্নেসটিতে উচ্চ তাপমাত্রায় ফুটন্ত তরল লোহা ভর্তি ছিল। সেটিতে আরোও স্ক্র্যাপ আয়রন বা বর্জ্য লোহা ঢালতে যাওয়ার সময়েই এই ঘটনা ঘটেছে। ফার্নেসটির মুখ বন্ধ থাকার কারণে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কারখানার দুর্ঘটনাগ্রস্ত অংশটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় মৃত গাড়ির চালক আমির খান হাওড়া বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জনকে বর্ধমানের নবাবহাটে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ৩ জন পুড়ে যাওয়ায় দুর্গাপুরের গৌরী দেবী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এই ঘটনায় মঙ্গলবার আহতদের দেখতে বর্ধমান হাসপাতালে আসেন সংগঠনের জেলা সভাপতি সন্দীপ বসু। তিনি এই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের সেফটি ও সুরক্ষা প্রচুর ঘাটতি ছিল, এটা সত্যি। কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদের আই কার্ড পর্যন্ত নেই। ডাক্তার, মেডিসিন, অ্যাম্বুলেন্স থাকে না। সেবিষয়টিও নজরে এসেছে। যিনি মারা গেছেন তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যেমন দাবী জানিয়েছি, তেমনি আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার খরচ এবং যতদিন পর্যন্ত আহত শ্রমিকরা সুস্থ না হচ্ছে ততদিন তাদের মাইনে দেওয়ার দাবী জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষা নিয়ে পর্যবেক্ষন দল গঠন করবে আইএনটিটিইউসি বলে জানান সন্দীপ বসু।