আশা, আকাঙ্ক্ষার দোলাচলে বর্ধমান পুরবাসী, আদৌ কি পাওয়া যাবে বিশ্বমানের পুরসভা!

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পুরসভা এলাকার নাগরিকদের উৎকৃষ্ট মানের পুর পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত হয় পুরসভা। পুর নাগরিকরা ভোট দিয়ে নিজের নিজের ওয়ার্ডের উপযুক্ত প্রার্থীকে নির্বাচিত করেন আগামী পাঁচ বছর এলাকার সার্বিক উন্নয়নের আশায়। সেক্ষেত্রে এলাকার জল, আলো, রাস্তা, জঞ্জাল, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে যেমন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা থাকে, তেমনি এলাকাকে অসামাজিক কার্যকলাপ মুক্ত রাখারও দাবি থাকে।

বিজ্ঞাপন

 প্রত্যেক ওয়ার্ডের বসবাসকারী মানুষ চায় তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি সারা বছর এলাকার নাগরিকদের স্বার্থে কাজ করবেন। লক্ষ্য রাখবেন সেই ওয়ার্ডের সার্বিক ভাল মন্দ। পাশপাশি এও লক্ষ্য রাখবেন এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা সহ সাংস্কৃতিক পরিবেশ যেন আরো উন্নত হয়। কিন্তু বিগত দিনে দেখা গেছে, বর্ধমান পুরসভা এলাকার একাধিক ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সঠিক পুর পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে বারবার অভিযোগ করেছেন। এমনকি বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ওয়ার্ডের শতাধিক বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে খোদ পুরপিতা বা মাতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। 

প্রায় রাত পোহালেই পৌরসভা নির্বাচন। বর্ধমান পুরসভার শেষ নির্বাচন সংগঠিত হয়েছিল ২০১৩ সালে। এরপর আর নির্বাচন হয়নি। গত পুর বোর্ড এর মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০১৮সালে। এরপর সরকারিভাবে প্রশাসক নিয়োগ করে পুরসভা পরিচালিত হয়েছে। পরবর্তীকালে ২০২১সালের আগস্ট মাসে প্রশাসক সরিয়ে পুর প্রশাসক মন্ডলী (বোর্ড অফ এডমিনিস্ট্রেটর) নিয়োগ করা হয়। ফলে প্রায় ৮বছর পর বর্ধমান পুরবাসী ফের সুযোগ পাচ্ছেন গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হতে। একই সাথে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্বভার তুলে দেওয়ার। তাই অনেক আশা, আকাঙ্ক্ষার বাতাবরণে আগামী ২৭তারিখ মানুষ ফের একবার ভোটের লাইনে দাঁড়াবেন তাদের মূল্যবান গণতান্ত্রিক অধিকার কে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে।

ইতিমধ্যেই তৃণমূল, বিজেপি, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এই নির্বাচনের প্রধান প্রতিপক্ষ দল হিসেবে জোরকদমে শেষ লগ্নের প্রচারে ব্যস্ত। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রতিদিন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে সুনাগরিক পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে চলেছেন। কিন্তু এরপরেও বর্ধমানবাসীর একাংশ রীতিমত আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ৩৪বছরের বাম পুর বোর্ড কিংবা পরবর্তীকালে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুর বোর্ড – কেউই নাগরিক পরিষেবার চূড়ান্ত পর্যায়ে বর্ধমান পুরসভা কে নিয়ে যেতে পারেনি। ভাঙ্গা, বেহাল রাস্তা, আলোর অভাবে অন্ধকার পড়ার গলি, দুর্বিষহ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা, পাড়ায় পাড়ায় জঞ্জালের স্তূপ, পানিও জলের সমস্যা, ঘরে ঘরে পরিশ্রুত পানিও জলের দাবি সহ সর্বোপরি শহরের একাধিক ওয়ার্ডে অসামাজিক কার্যকলাপের রমরমা রোধে বিগত কোনো পুরবোর্ডই সেই অর্থে সাফল্য দেখাত পারেনি। 

তারা এও জানিয়েছেন, কাজ যে একেবারেই হয়নি তা নয়, তবে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অনেক কাজ যেমন মাঝপথে থেমে গেছে, তেমনি অনেক পরিকল্পনা আদপে বাস্তবায়ন করাই হয়নি। সেক্ষেত্রে এমনও অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব অনেক সময় পুরসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করেছে। তাই বর্ধমানবাসীর চাহিদার সঙ্গে পুর নাগরিক পরিষেবার বিস্তর ফারাক থেকেই গেছে।  সুতরাং নব নির্বাচিত বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলর থেকে চেয়ারম্যান – সকলের কাছেই এবার আধুনিক, উন্নয়নমুখী, বিজ্ঞানসম্মত, জনদরদী সর্বোপরি বিশ্বমানের পুরসভা আশা করছেন আপামর বর্ধমানবাসী।

আরো পড়ুন