কাটোয়ায় সংসদ সদস্য সুনীল মন্ডল কে ঘিরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ, গো ব্যাক স্লোগান, উত্তেজনা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কাটোয়া: কাটোয়ায় মালঞ্চ থেকে দেয়াসিন যাওয়ার সেতু তৈরির কাজ পরিদর্শন করতে এসে গ্রামবাসীদের চরম বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সংসদ সদস্য সুনীল মণ্ডল। বুধবার সেতু তৈরির কাজের টাকা না পেয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ সুনীল মণ্ডলকে দেখে গো-ব্যাক স্লোগান থেকে শুরু করে চোর অপবাদ দিয়ে গ্রাম থেকে কার্যত বের করে দিলেন। 

বিজ্ঞাপন
শুধু তাই নয়, ঘরে ফেরা সংসদ সদস্যকে গ্রামে আর কোনও দিন না আসার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। গ্রামবাসীদের দাবি, সেতু তৈরির কাজ করে পাঁচ বছর ধরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পাননি। বার বার সংসদ সদস্য প্রতিশ্রুতি দিয়েও টাকা না দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছিলেন অনেকে। শেষে এদিন গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে গ্রাম ছাড়লেন তিনি।

এ বিষয়ে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে গ্রামবাসীদের কি চুক্তি হয়েছিল তা তিনি জানেন না। যদিও ওই ঠিকাদার এখন আর কাজ করছে না। ঠিকাদার জানিয়েছে, কয়েকজন দু’ চার লক্ষ টাকা পাবেন। আর গ্রামবাসীরা বলছেন তাঁরা ২০ লক্ষ টাকা পাবেন। সাংসদ বলেন, জেলাশাসককে তিনি বলেছিলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে ওই ঠিকাদারের ঠিক গন্ডোগোল হয়েছে তা মিটিয়ে দিতে। এরমধ্যে আর তো তিনি ছিলেন না। তিনি শুধু কাজের কাগজ পত্র সই করতে পারেন, এর বেশি ক্ষমতা তাঁর নেই। সুনীল বাবু আরও বলেন, তিনি তৃণমূল দলের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য বিজেপি তে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা মিটে গিয়েছে। তিনি এখন তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন।

জানা গিয়েছে, কাটোয়ায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে ঝুলে আছে মালঞ্চ থেকে দেয়াসিন যাওয়ার সেতু তৈরির কাজ। ঠিকাদার বদলেও কাজ শেষ করতে না পারায় যাতায়াত করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সাংসদ তহবিল থেকে এই মালঞ্চ সেতু তৈরির জন্য ২০১৮ সালে দু’কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। ব্রাম্ভনী নদীর উপরে কয়েকটি পিলার তৈরির কাজ করা হয়। এরপরই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ অসমাপ্ত রেখেই কাজ ছেড়ে দেন। এরপরে সেতু নির্মানের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে এই কাজের বরাত নেন অন্য ঠিকাদার।

বুধবার দুপুর নাগাদ সেতুর একটি ঢালাই এর কাজ পরিদর্শন করতে যান সুনীল বাবু। তখনই গ্রামের বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তারপর তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরা তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে গ্রাম ছাড়েন। এদিন গ্রামের বাসিন্দা আশীষ কুমার মণ্ডল বলেন, গ্রামে অনেক শ্রমিক কাজ করে টাকা পাননি। সুনীল বাবু তাদের টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও দেন নি। 

আরেক বাসিন্দা তুফান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মালপত্র সাপ্লাই করা হয়েছে। আজও সেই টাকা পাননি তিনি। এদিকে বিক্ষোভের বিষয়ে কাটোয়ার বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনি বিক্ষোভের বিষয়ে কিছুই জানেননা। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তবে কেউ কাজ করলে তার পাওনা টাকা মিটিয়ে দেওয়া উচিত। এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় ব্যপক শোরগোল পড়েছে।

আরো পড়ুন