জাতীয় স্তরের ক্যারাটে প্রতিযোগীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ, গলসি থেকে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বিবাহিত হওয়ার পরেও ফেসবুকে ফেক একাউন্ট তৈরি করে এক নাবালিকার সঙ্গে পরিচয় করে তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করার জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিলো ১৪বছরের এক নাবালিকা। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫জুলাই হাওড়া জেলার বালি থানা এলাকায়। মৃত নাবালিকার নাম পামেলা অধিকারী। বালি থানার পুলিশ এই কেসের তদন্তে নেমে নাবালিকার ফোনের সূত্র ধরে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানা এলাকা থেকে শেখ তৌরিফ ওরফে সানি খান কে গ্রেফতার করেছে। 

বিজ্ঞাপন
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে শেখ তারুফ সানি খান নামে তার বাড়ির একটি ফোন থেকে ফেসবুকে একটি একাউন্ট খুলে পামেলা অধিকারীর সঙ্গে পরিচয় করে। পরবর্তীতে দুজনের মেলামেশার ছবি দেখিয়ে নাবালিকাকে ব্ল্যাকমেল করছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে নাবালিকার হাতে লেখা মোবাইল ফোনের পাস ওয়ার্ড উদ্ধার করে। উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট। এরপরই ঘটনার ৮দিনের মাথায় গলসি থেকে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে বালি থানার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ক্যারাটে অনুশীলনকারী এবং কয়েকটি জাতীয় স্তরের ক্যারাটে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ১৪ বছরের কিশোরীকে হাওড়া শহরের বালি থানা এলাকার তার বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের সিলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। নিহত পামেলা অধিকারী ৮ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটিকে এক যুবক ব্ল্যাকমেল করেছে, যার সাথে সম্প্রতি সে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কিশোরী তা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে মারা যান।
পুলিশ মৃত কিশোরীর ফোন থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। যাতে কিশোরী লিখেছিলেন ‘খানের ব্ল্যাকমেলিং আর সহ্য করতে না পারায় তিনি চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন।’ কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে বালি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। বালি থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরে পলাতক যুবকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করা হয়েছিল। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়। নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পামেলা তার ছবি এবং ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করতেন। এমনকি তিনি মডেলিংয়ের অফার পেতে শুরু করেছিলেন।
পরিবারটি পুলিশকে জানিয়েছে, যে সম্প্রতি এক যুবক একটি মডেলিংয়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পামেলার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তারা এটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি স্থানে মিলিতও হয়েছিল। অভিযোগ সেই সময় সেখ তারুফ ওরফে সানি খান তাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের কয়েকটি ছবি তোলেন। পরে মেয়েটিকে ওই যুবক অশালীন প্রস্তাব দিলে মেয়েটি তা প্রত্যাখ্যান করার পরে তিনি ওই ছবিগুলি দিয়ে ব্ল্যাকমেল করা শুরু করেছিলেন। তার ফোনে যে সুইসাইড নোটটি পাওয়া গিয়েছিল, তাতে মেয়েটি জানিয়েছিল যে সে সামাজিক কলঙ্ক থেকে ভয় পেয়েছিল এবং তার জীবন শেষ করতে বাধ্য হয়েছিল।

আরো পড়ুন