নাবালিকার আত্মঘাতী কাণ্ডে বর্ধমানে বিতর্কিত দেওয়াল চিত্র মুছে দিল পুলিশ

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পুরসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন বর্ধমান শহরের ২৭নং ওয়ার্ডে এক নাবালিকার আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনার পিছনে যে প্ররোচনামূলক দেওয়াল চিত্র কে কেন্দ্র করে বিতর্কের ঝর উঠেছিল রাজ্য জুড়ে, সেই ছবি অবশেষে শনিবার মুছে দিল বর্ধমান থানার পুলিশ। প্রসঙ্গত গত ২মার্চ পুরসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন বিকেলে বর্ধমান শহরের ২৭নং ওয়ার্ডে এক নাবালিকার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় রাজ্য জুড়ে আলোড়ন পড়েছিল। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল নির্বাচনে জেতার পরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে কয়েকশ তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে বিজয় মিছিল বের করে স্থানীয় কাউন্সিলর বসিরুদ্দীন আহমেদ ওরফে বাদশা। আর সেই মিছিল থেকেই বাদশার নেতৃত্বেই মৃতার বাড়িতে ঢুকে পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। 

বিজ্ঞাপন

মৃতার দিদি বর্ধমান থানায় অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন, সেদিন পরিবারের মহিলাদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল। আর সেই অপমানেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয় তাঁর বোন। তিনি আরো অভিযোগ করেছিলেন, পুরসভা নির্বাচন ঘোষণার পরই ৬ ফ্রেব্রুয়ারি বাদশা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাদের বাড়ির উল্টোদিকে একটি বাড়ির দেওয়ালে রং তুলি দিয়ে একটি গাছের ডালের নিচে তিনটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে ইঙ্গিত করে ছবি এঁকে দিয়ে গিয়েছিল। এমনকি ভোটে জিতলে পরিবারের মেয়েদের ভয়ানক পরিণতি হবে বলেও হুমকি দিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। আর ভোটের ফল ঘোষণার দিন বিকেলে বাদশা ও তার লোকেদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁর বোন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ ছিল মৃতার দিদির।

পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পরবর্তীকালে এই ঘটনায় যুক্ত পাঁচজন কে গ্রেপ্তার করে। পরে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর মৃত নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এক যুবককে বর্ধমানের খাগড়াগড় থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও নাবালিকার মৃত্যুর জন্য দায়ী করে যে ১৪জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত খোদ তৃণমূল কাউন্সিলার বসির আহমেদ কে পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করেনি বলেই পরিবারের অভিযোগ। 

এরই মধ্যে শনিবার দুপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতা নাবালিকার বাড়ির সামনে দেওয়ালে এঁকে রাখা প্ররোচনামূলক বিতর্কিত দেওয়াল চিত্র মুছে দেওয়া হল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার তদন্তের স্বার্থে এতদিন এই ছবি মোছা হয়নি। এই ছবি সম্পর্কে আদালত কেও জানানো হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। তদন্ত চলছে। ছয় জন অভিযুক্ত কে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি পর্যবেক্ষণের পরই এই ছবি মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। 

আরো পড়ুন