পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে অব্যাহত বোম,বন্দুক,গুলি উদ্ধার, চারদিনে গ্রেপ্তার ৩০জন দুষ্কৃতী

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে অব্যাহত বেআইনি অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, গুলি উদ্ধারের কাজ। একইসাথে পুলিশি অভিযানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের সংখ্যা। 

বিজ্ঞাপন
বগটুইয়ে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দশ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন। গোটা রাজ্যে যেখানে বোমা, বেআইনি অস্ত্র মজুত করা হয়েছে তা অবিলম্বে পুলিশকে উদ্ধার করতে হবে। তারপর থেকেই লাগাতার শুরু হয়েছে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ২৮ তারিখ অবধি পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৩২টি। গুলি উদ্ধার হয়েছে ৫৪টি ও অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০জন কে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে এখনও অবধি বোমা উদ্ধার হয়েছে ১৬৭টি। সব মিলিয়ে জেলা জুড়ে পুলিশ অভিযান অব্যহাত। 

জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘আমরা ২৪ তারিখ থেকে জেলায় বিশেষভাবে অভিযানে নেমেছি। প্রত্যেক থানা এলাকায় পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা রুট মার্চ করছেন। জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে আমাদের এই অভিযান চলবে। শুধু বোমা,বন্দুক উদ্ধারই নয়, এবার আমরা বোমা তৈরীর সাথে যারা বিগত দিনে জড়িত ছিল, বিভিন্ন থানায় যাদের নামে অভিযোগ রয়েছে তাদেরও থানায় হাজিরা দেবার ব্যবস্থা করছি। আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নে কোথাও আপস করবে না পুলিশ। লাগাতার অভিজান চলবে আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে।

এদিকে সোমবার রাতে এলাকাবাসীদের কাছে খবর পেয়ে গলসি ১ ব্লকের পারাজ পঞ্চায়েতের করকডাল ও শিড়রাই পঞ্চায়েতের শিড়রাই গ্রামের পশ্চিম পাড়ার একটি খামার থেকে গলসি থানার পুলিশ উদ্ধার করে খড় চাপা দেওয়া জারে রাখা বোমা। এই দুই জায়গা থেকে ৩০টি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে গলসি থানার পুলিশ। করকডাল এলাকায় ১২টি ও শিড়রাই এলাকায় ১৮টি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বোমা গুলি জারে রেখে সেই জারের উপরে কাটা খড়ের টুকরো দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। এলাকার লোকেদের দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখে বোম্ব স্কোয়াডে খবর দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে ৩০টি বোমা উদ্ধার করে একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। 

বোম্ব স্কোয়াডের এক আধিকারিক জানিয়েছে, বোমাগুলি সদ্য বানানো হয়েছিল। এলাকায় ফেটে গেলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। পাশাপাশি রায়না থানার রায়নার হিজলনা পঞ্চায়েত এলাকার দামোদরের চরের কাছে ফুলবাড়ি এলাকার একটি জঙ্গলের ধারে লাল রঙের জার পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রায়না থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে দেখে জারের ভিতরে বোমা রাখা রয়েছে। পরে বোম্ব স্কোয়াডের লোকেদের খবর দিলে তারা এসে বোমা গুলিকে উদ্ধার করে নিস্ক্রীয় করে দেয়। এখানে চারটি বোমা পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধারাবাহিক পুলিশি অভিযানেই এলাকার দুস্কৃতীরা মজুত বোমা বিভিন্ন জায়গায় ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকেই। 

অন্যদিকে মেমারি থানার পুলিশ ২৬ তারিখে ছিনুই ব্রিজের কাছে জিটি রোডের ধার থেকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া তিন জনকে গ্রেপ্তার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে সোমবার রাতে আরও দুজন কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম চন্দন পাল ও চাঁদু শেখ। চন্দন মেমারি পুরসভার মায়ের কোল এলাকার বাসিন্দা। চাঁদুর বাড়ি ইছাপুর এলকায়। ধৃতদের এদিন বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হয়। 

অন্যদিকে খন্ডঘোষের মেটেডাঙ্গা এলাকায় একজন ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে এলাকার লোকেরাই খণ্ডঘোষ থানায় ফোন করে। পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করলেও পুলিশ তাড়া করে ধরে ফেলে তাকে। ধৃত যুবক কে তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে একটি পাইপগান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম শ্রীমন্ত ঘাঁটি। খন্ডঘোষ থানার বিচখাড়া গ্রামের বাসিন্দা ধৃত। ধৃতকে এদিন বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেবার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। কিভাবে ধৃতের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র এলো এবং আর কেই ধৃতের সাথে যুক্ত আছে কিনা তা জানতেই পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আরো পড়ুন